চিনের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ছিন গ্যাং। —ফাইল চিত্র।
গত ২৫ জুন শেষবার জনসমক্ষে দেখা গিয়েছিল চিনের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ছিন গ্যাং-কে। তার পরে যেন উবেই গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর আচমকা বেপাত্তা হয়ে যাওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরেও চর্চা কম হয়নি। এর মধ্যেই বিদেশ মন্ত্রক থেকে গ্যাং-কে সরিয়ে দেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই পদ খোয়াতে হয়েছে গ্যাং-কে। তিনি পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন আমেরিকার এক নাগরিকের সঙ্গে। সূত্রের খবর, গোটা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত চিন নেতৃত্ব এখন খতিয়ে দেখছেন, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও গুরুতর বিষয় গ্যাং ফাঁস করেছেন কিনা।
শি জিনপিং ২০২১ সালের জুলাইয়ে আমেরিকায় রাষ্ট্রদূত করে পাঠিয়েছিলেন তাঁর অতি বিশ্বস্ত ৫৭ বছর বয়সি গ্যাং-কে। আমেরিকার ওই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট, ওই বছরের শেষার্ধে দূতাবাসের এক অনুষ্ঠানে আমেরিকার একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অ্যাঙ্কর ফু জিয়াওটিয়ানের সঙ্গে গ্যাং-এর পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরেই তাঁর চেয়ে ১৭ বছরের ছোট ফু-এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান গ্যাং। গত ডিসেম্বরে গ্যাং চিনের বিদেশমন্ত্রী হন। তার কিছু দিনের মধ্যেই আমেরিকা সফরে যান তিনি। আমেরিকার ওই সংবাদমাধ্যমটির রিপোর্ট, ওই সময় সন্তানের জন্ম দেন ফু। সকলের অগোচরে ফু ও তাঁর সন্তানকে নাকি দেখেও এসেছিলেন গ্যাং। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে সন্তান কোলে দেখা গিয়েছে ফু-কে। যদিও সেই সন্তানের পিতৃপরিচয় এখনও প্রকাশ করেননি ওই টিভি অ্যাঙ্কর।
সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু গ্যাং-এর গোপন প্রণয়ের কথা জানতে পারেন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিক। গোটা বিষয়টি তিনি জানিয়ে দেন গ্যাং-এর স্ত্রীকে। ক্ষিপ্ত গ্যাং-পত্নী নালিশ জানান প্রেসিডেন্টের দরবারে। আমেরিকার ওই সংবাদমাধ্যমটির দাবি, এর পর থেকেই বেপাত্তা গ্যাং। বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন চিন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব। আমেরিকার ওই সংবাদমাধ্যমটি চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, দেশের বিদেশ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি ও তথ্য ফাঁস হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন চিনা নেতৃত্ব। যে হেতু বিষয়টির সঙ্গে আমেরিকা জড়িয়ে, তাই চিনের অস্বস্তির মাত্রা আরও বেশি। সূত্রের খবর, বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয় এমন চিনা আধিকারিকদের গতিবিধির খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নজরে রয়েছেন চিনা সেনাবাহিনীর শীর্ষ অফিসারেরাও।