China

Afghanistan: ৯/১১ উস্কে আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি চিনের

আফগানিস্তানে তালিবান শাসনকে স্বাগত জানালেও এখনই নতুন সরকার নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় তারা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেজিং শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২১ ০৭:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

তালিবান নেতৃত্ব আফগানিস্তানে রাজধানী কাবুলের দখল নেওয়ার পর পরই সে দেশ নিয়ে নিজেদের অবস্থান প্রায় স্পষ্ট করে দিয়েছিল চিন। আজ আরও এক ধাপ এগিয়ে আমেরিকাকে প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল তারা। সেই সঙ্গে তারা শুরু করেছে দর কষাকষিও। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে বলা হয়েছে, আমেরিকা মুখে সন্ত্রাস দমনের কথা বলে সেই নীতি চিনের বিরুদ্ধে কার্যকর করলে, তার ফল ভাল হবে না। সেই সঙ্গেই চিনা বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, তালিবান আফগানিস্তানে ফের শক্তিধর হয়ে উঠলে ৯/১১-র মতো ঘটনা ফের ঘটতে পারে আমেরিকায়।

Advertisement

তবে আফগানিস্তানে তালিবান শাসনকে স্বাগত জানালেও এখনই নতুন সরকার নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় তারা। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান নিয়ে আমাদের অবস্থান প্রথম থেকেই স্পষ্ট। তবে তালিবান নেতৃত্ব সেখানে কী ভাবে সব পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ছে, এখন সেটাই দেখার।’’ অর্থাৎ নতুন সরকার গঠনের আগে আপাতত আফগানিস্তান নিয়ে ‘ধীরে চলো নীতি’ নিয়েছে শি চিনফিংয়ের সরকার।

চিনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্রে বলা হয়েছে, আমেরিকা যদি চিনের সাহায্য চায়, সে ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনকে বিষয়টি নিয়ে ‘আন্তরিক’ হতে হবে। অর্থাৎ মুখে এক প্রতিশ্রুতি দিয়ে, পরে সেই কথা থেকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিলে তার ফল ওয়াশিংটনকেই চোকাতে হবে বলে সরাসরি মুখপত্রে লিখেছে শি চিনফিংয়ের দল।

Advertisement

আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে গত কাল চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-কে ফোন করেছিলেন আমেরিকান বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ওই মুখপত্রে দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চিনের সহযোগিতা প্রার্থনা করেছে জো বাইডেন প্রশাসন। দোহার শান্তি আলোচনায় চিনের ভূমিকার প্রশংসাও করেছেন আমেরিকান বিদেশসচিব। ব্লিঙ্কেনের সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়েছে চিনের সরকার। তবে সেই সঙ্গেই চিন আমেরিকার কাছে স্পষ্ট করেছে যে, আফগানিস্তানে নতুন কোনও গৃহযুদ্ধ তারা আর চায় না। সেখানে স্থিতাবস্থা ফেরাতে আমেরিকার বড় ভূমিকা থাকবে বলে মনে করছে চিনফিং সরকার। ব্লিঙ্কেনকে গত কাল ই এ-ও বলেছেন যে, এ ভাবে তাড়াহুড়ো করে আমেরিকান বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে আসায় গোটা অঞ্চলকে তার ফল ভুগতে হচ্ছে।

চিনা বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, আফগানিস্তানে চিন, রাশিয়া, আমেরিকা, পাকিস্তান এই চারটি দেশেরই স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। আপাতত আমেরিকা আর চিন দু’দেশই চায় আফগানিস্তান ফের যাতে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর না হয়ে ওঠে। তাঁদের দাবি, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবাদ ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে ৯/১১-র মতো হামলা হতে বেশি সময় লাগবে না। এই মুহূর্তে আফগানিস্তানে চিনা নাগরিকেরা সুরক্ষিতই রয়েছেন। খোদ তালিবান নেতৃত্বই তাঁদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। বরং নিজেদের দেশের নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য চিনের দিকে তাকাতে হচ্ছে আমেরিকাকে।

ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গেও গত কাল কথা বলেছেন ওয়াং ই। স্বাভাবিক ভাবেই আমেরিকার থেকে রাশিয়াকে অনেক বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসেবে মনে করছে চিন। তালিবান সরকারকে মান্যতা দিতে ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারও প্রস্তুত। নতুন আফগানিস্তান গঠনে এই দু’দেশ ইতিবাচক ভূমিকাই নেবে বলে জানিয়েছেন চিনা বিদেশমন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement