এমন ট্রেন চলতে পারে তিব্বত সীমান্ত পর্য়ন্ত। —ফাইল চিত্র
লাদাখ নিয়ে ভারত-চিন সঙ্ঘাত এখনও পুরোপুরি মেটেনি। তার মধ্যেই চিনের একটি রেলপ্রকল্প ঘিরে নয়াদিল্লি-বেজিং সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হতে পারে অরুণাচল সীমান্তে। শি চিনফিং সরকারের সিচুয়ান-তিব্বত রেল প্রকল্পের ঘোষণা ঘিরে নতুন এই টানাপড়েন শুরু হয়েছে। নয়াদিল্লির তরফে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া না জানানো হলেও সাউথ ব্লক সূত্রে খবর, গোটা বিষয়ের উপর নজর রাখছে ভারত।
কেন উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা? এই রেল প্রকল্পে নতুন রেললাইন পাতার কাজ শুরু হবে সিচুয়ান প্রদেশের রাজধানী চেংডু থেকে তিব্বতের লিনঝি পর্যন্ত। এই লিনঝি নিয়েই বিতর্ক রয়েছে। অরুণাচল সীমান্তের খুব কাছে লিনঝি। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অংশ হলেও বেজিং তাকে তিব্বতের অংশ বলে দাবি করে। এখনও এ নিয়ে তেমন কোনও উচ্চবাচ্য না করলেও প্রকল্পের কাজ এগোলে নয়াদিল্লি তা নিয়ে আপত্তি তুলতে পারে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির।
সিচুয়ান-তিব্বত রেলপথে দু’টি টানেল, একটি ব্রিজ এবং ইয়ান-লিনঝি সেকশনের বিদ্যুৎ সরবরাহের দরপত্রের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে চিনা রেলওয়ে। তাতে বোঝা যায়, শীঘ্রই এই প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে নড়াচড়া শুরু হয়েছে দিল্লিতেও। জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চেংডু থেকে তিব্বতের লাসা যাওয়ার সময় ৪৮ ঘণ্টা থেকে কমে ১৩ ঘণ্টা হবে।
আরও পড়ুন: রাত পোহালেই ভোট আমেরিকায়, এগিয়ে বাইডেন॥ সমীক্ষা ‘ভুয়ো’, পাল্টা ট্রাম্পের
আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ মুম্বইয়ে? আভাস দিল সমীক্ষা
নতুন এই প্রকল্পটির মোট দূরত্ব ১ হাজার ১১ কিলোমিটার। ট্রেনগুলি চলবে ১২০ থেকে ২০০ কিলোমিটার গতিবেগে। প্রকল্পে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৭৮০ কোটি আমেরিকান ডলার। ভারতের আপত্তির পাশাপাশি প্রকল্প ঘিরে চিনের জন্য আরও উদ্বেগের বার্তা রয়েছে ভূতত্ত্ববিদদের কাছ থেকে। এই প্রকল্পটি তৈরি হবে কুইংহাই-তিব্বত মালভূমির উপর দিয়ে, যা ভূতাত্ত্বিক ভাবে বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় এলাকা। অর্থাৎ, ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে ওই অঞ্চলে ক্রমাগত পরিবর্তন ঘটে চলে। ফলে ভূমিকম্প, ধ্বসের মতো ভূপ্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা সব সময়ই বেশি। তাই শেষ পর্যন্ত এই রেলপ্রকল্প কতটা সুগম হবে, তা নিয়েও চিন্তা রয়েছে বেজিংয়ের।