চিনের জে-২০ এবং তাইওয়ান বায়ুসেনার এফ-১৬ভি। ছবি রয়টার্স।
নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। এই পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য চিনা হামলার প্রতিরোধে চূড়ান্ত সামরিক প্রস্তুতি শুরু করল তাইওয়ান। চিনা বিমানবাহিনীর ‘স্টেলথ এয়ার সুপিরিওরিটি ফাইটার’ জে-২০-র মোকাবিলায় এ বার আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ভি মোতায়েনের ‘বার্তা’ দিল তাইপেই।
তাইওয়ান বায়ুসেনার তরফে বুধবার পূর্ব হুয়ালিয়েন কাউন্টির একটি বিমানঘাঁটিতে ‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’র ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, জাহাজ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত এফ-১৬ ভি-র ছবি। চিন সাগরের ‘দ্বীপরাষ্ট্রের’ দাবি, অস্ত্রসজ্জিত ছ’টি যুদ্ধবিমান রাতে টহলদারি উড়ানও চালিয়েছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা দফতর এক বিবৃতিতে বলেছে ‘চিনা কমিউনিস্ট বাহিনীর আগ্রাসনের মুখে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করেছি আমরা’।
চিনা বিমানবাহিনীর জে-২০। ফাইল চিত্র।
প্রসঙ্গত, চিন তার জে-২০-কে ‘সম্পূর্ণ স্টেলথ’ (রাডার নজরদারি ফাঁকি দিতে সক্ষম) বলে দাবি করলেও মার্কিন ও ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞদের অধিকাংশেরই এ বিষয়ে সংশয় রয়েছে। তাঁদের মতে, চিনা বিমানটি বড় জোর ‘আংশিক স্টেলথ’। বস্তুত, ভারতীয় বায়ুসেনার সুখোই-৩০ এমকেআই ফাইটার জেটের রাডার সীমান্তে জে-২০-র গতিবিধি চিহ্নিত করেছে বেশ কয়েক বারই। তাইওয়ানের এফ-১৬ভি-র পূর্বসূরি এফ-১৬ সুপার ফ্যালকন ভারতীয় বায়ুসেনার অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে এক দশক আগে নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন আলোচনা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সে তৈরি রাফাল বেছে নেওয়া হয়।
চলতি মাসের গোড়ায় আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনার স্ফুলিঙ্গ ছড়াতে শুরু করেছিল, এখনও তার আঁচ নেভেনি। তাইওয়ান প্রণালী-সহ দক্ষিণ চিন সাগরের বিভিন্ন অংশে চিনা রণতরী ও ‘অ্যাম্ফিবিয়ান ল্যান্ডিং ভেহিকলস’ মোতায়েনের খবর মিলেছে। নেমেছে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ডুবোজাহাজও। এই পরিস্থিতিতে চিনা নৌবহরের মোকাবিলায় এফ-১৬ভি কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে সামরিক বিশ্লেষকদের একাংশের মত।