ফের দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয় চিন। ছবি: এএফপি।
আপাত-লক্ষ্য দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চল। আসল ‘নিশানা’ আমেরিকা! আধিপত্য এবং সামরিক শক্তি জাহির করতে বুধবার রাতে দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত এলাকায় অন্তত দু’টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে চিন। ওই অঞ্চলে সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে বেজিংয়ের এই পদক্ষেপ ঘিরে পেন্টাগন কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
চিনের সরকারি সংবাদপত্র ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’ বৃহস্পতিবার জানায়, ডংফেং সিরিজের মাঝারি পাল্লার ডিএফ-২১ডি এবং দূরপাল্লার জাহাজ-বিধ্বংসী ডিএফ-২৬বি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। কুইংঘাই এবং ঝিজিয়াং অঞ্চল থেকে দু’টি করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের অদূরের সমুদ্রে। চিনের প্রতিরক্ষা দফতরের মুখপাত্র উ কিয়ান বলেছেন, ‘‘পরিকল্পিত সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবেই এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা।’’
দক্ষিণ চিন সাগরে আধিপত্য বিস্তার ঘিরে সম্প্রতি তাইওয়ান এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছে চিন। তাইওয়ানের উপর সম্ভাব্য চিনা হামলা ঠেকাতে মার্কিন নৌবহর মোতায়েন হয়েছে সেখানে। সেই বহরে রয়েছে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ (এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার) ইউএসএস রোনাল্ড রেগন।
আরও পড়ুন: ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নিতে হবে ফাইনাল পরীক্ষা, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এই আবহে গত মাসে বিতর্কিত প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের সর্ববৃহৎ দ্বীপ উডি আইল্যান্ডে এইচ-৬জে বম্বার বিমান মোতায়েন করেছিল চিন। চিনা সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’ দাবি করে, ওই এলাকায় মার্কিন বিমানবাহী জাহাজের তৎপরতায় বাধা দিতেই ওই পদক্ষেপ করা হয়েছে। অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে গিয়ে চিন অন্য কয়েকটি দেশের সার্বভৌমত্বে আঘাত করছে।
আরও পড়ুন: ‘সরকারের সিদ্ধান্তে ভুগছেন পড়ুয়ারা’, নিট-জেইই নিয়ে সরব রাহুল
ঘটনাচক্রে, ডিএফ-২৬বি ক্ষেপণাস্ত্র ‘এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার কিলার’ হিসেবেই পরিচিত। অন্যদিকে, ডিএফ-২১ দ্রুতগতিতে ধাবমান জাহাজ ধ্বংস করতে পারদর্শী। ফলে চিনের আসল ‘লক্ষ্য’ সম্পর্কে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই নিঃসংশয়। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে, ‘‘দক্ষিণ চিন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চল ঘিরে এই সামরিক অনুশীলন সেখানে উত্তেজনা প্রশমন ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নীতির পরিপন্থী।’’ হাওয়াইয়ের প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কূটনীতি ও সামরিকবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কার্ল শুস্টারের মতে মার্কিন নৌবহরকে চাপে রাখতেই চিনের এই পদক্ষেপ।