ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। —ফাইল চিত্র।
৯/১১-র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার হামলার পর এ রকম দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পশ্চিম এশিয়ামুখী আমেরিকা-ইউরোপের রাষ্ট্রনেতারা। আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সফরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইজ়রায়েলে পৌঁছন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। সেখানে বৈঠক সেরেই আজ তিনি সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা দেন। সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে তাঁর। তেল আভিভ ছাড়ার আগে জানান, ইজ়রায়েলের জয়ই দেখতে চান তিনি। ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী জেমস ক্লেভেরলিও যাচ্ছেন মিশর, তুরস্ক, কাতারে।
কূটনীতিকদের মতে, এই উৎকণ্ঠা বা উত্তেজনার কারণ শুধু ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ নয়। আরব দুনিয়া ইজ়রায়েল ও তার ‘বন্ধু’ পশ্চিমি দেশগুলোর উপর চটে। এ অবস্থায় তেল ও সম্পদ সমৃদ্ধ আরবের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টায় ব্রিটেন তথা পশ্চিম।
ইজ়রায়েল-গাজ়ার পরিস্থিতি আজও একই রকম। আজ ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তারা ঘোষণা করেছে, ইজ়রায়েল অধিকৃত পশ্চিম ভূখণ্ডের নুর শাম শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েক জন সন্ত্রাসবাদীকে হত্যা করা হয়েছে। ১০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। আইডিএফ আরও জানিয়েছে, বেশ কিছু জায়গায় বিস্ফোরক বসানো হয়েছিল। সেগুলি তারা সফল ভাবে নিষ্ক্রিয় করেছে। প্যালেস্টাইনি স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ছ’জন নিরীহ প্যালেস্টাইনিকে খুন করা হয়েছে।
ও দিকে, লেবানন থেকে রকেট এসে পড়েছে উত্তর ইজ়রায়েলের পশ্চিম গ্যালিলি এলাকায়। পাল্টা গোলাবর্ষণ করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনীও। পরে হামাস ঘোষণা করে, তারা লেবানন থেকে ৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
একটানা গোলাবর্ষণে ক্লান্ত গাজ়াবাসী। আরবের সাহায্য চান না তাঁরা। কোনও মুসলিম দেশের থেকে কিছু চাওয়ার নেই। সব আশা-ভরসা ঈশ্বরের উপর। আর একটাই প্রার্থনা— এই বোমাবর্ষণ বন্ধ হোক। বলছিলেন, ৭০ বছর বয়সি রাফাত আল নাখালা। হামাস আর ইজ়রায়েলের বহু যুদ্ধের সাক্ষী তিনি। সব হারানো দেখেছেন, বেকারত্ব দেখেছেন, দারিদ্রে কাটিয়েছেন এক জীবন। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি, ‘অবর্ণনীয়’। ইজ়রায়েলের নির্দেশ মতো উত্তর ছেড়ে দক্ষিণ গাজ়ায় পালিয়ে এসেছেন তিনি। তবে তাঁর কথায়, ‘‘গাজ়ার কোনও জায়গাই আর নিরাপদ নয়।’’
একই আর্তি এল-আওয়াদ এল-দালির মুখে। ৬৫-র বৃদ্ধ বলেন, ‘‘আমাদের ঘরবাড়ির উপর এ ভাবে বোমা হামলা বন্ধ হোক। আর কিছু চাই না।’’ রাস্তাঘাট বলে আর কিছু নেই। কেউ জখম হলে তাকে যে হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে, সেই উপায় নেই। বিদ্যুৎ নেই, পানীয় জল নেই। একা এক কোণায় পড়ে রয়েছে মানুষজন, মৃত্যুভয় নিয়ে। সেই সঙ্গে তাড়া করছে আতঙ্ক, এর পর কী হবে?
কাল বাইডেন প্যালেস্টাইনিদের জন্য ২০ ট্রাক ত্রাণসাহায্য পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছেন। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির বক্তব্য, ওইটুকু ত্রাণে কিছু হবে না। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস জানিয়েছেন, গাজ়ার যা অবস্থা, তাতে প্রতি দিন অন্তত ১০০ লরি ত্রাণ প্রয়োজন। সংবাদ সংস্থা