বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ শুধু ভারতেই নয়, অন্য দেশেও আলোচিত হচ্ছে। সম্প্রতি ব্রিটেনের সংসদে বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা উঠে আসে। তা নিয়ে অসন্তোষ জানাতে বুধবার ঢাকায় ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত সারাহ্ কুককে তলব করে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। তদারকি সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বৈঠক করেন ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, ব্রিটেনে বাংলাদেশ নিয়ে যে চর্চা চলছে, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তৌহিদ। মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকে ডেকে পাঠানো হয় ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মাকে। আগরতলায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের ঘটনার প্রেক্ষিতে তলব করা হয় তাঁকে। ঘটনাচক্রে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে তলবের পরের দিনেই ডেকে পাঠানো হল ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূতকে।
আবার বুধবারই বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেন তদারকি সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-এর কোনও প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন না। ৫ অগস্ট হাসিনার সরকারের পতনের আগে পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি (এরশাদ)। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইউনূস নিজেও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের কোনও জায়গা নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-ও দৃশ্যত বেশ কোনঠাসা বাংলাদেশে। অক্টোবরে ঢাকায় তাদের দলের সদর দফতরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-কে বাদ দিয়েই রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন ইউনূস। বড় দলগুলির মধ্যে এক মাত্র বিএনপির প্রতিনিধিরাই উপস্থিত ছিলেন ইউনূসের বৈঠকে। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত এবং অন্য দেশগুলিতে যে আলোচনা চলছে, সে কথা উঠে আসে বৈঠকে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশের হস্তক্ষেপ যে তাদের অপছন্দ সে কথাও উঠে আসে বৈঠকে। ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, দেশের প্রশ্নে ইউনূসের সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বিএনপি-সহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। জাপার দলীয় কার্যালয়ে হামলার অভিযোগের পর প্রশ্ন উঠে আসে, সে দেশে একটিই প্রধান দল থেকে যাবে কি না। বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় ঐক্য’-র স্বার্থে ইউনূসের রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠক আবারও সে প্রশ্ন উস্কে দিল।