(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্য সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়ী করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার বাংলাদেশের প্রশাসন ভেঙে পড়ার জন্য হাসিনাকেই দায়ী করছেন ইউনূস। একে অন্যকে দোষারোপ করছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান তদারকি সরকার প্রধান। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ইউনূসের দাবি, হাসিনাই বাংলাদেশের ‘সব কিছু ধ্বংস করেছেন’।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ ঘিরে তপ্ত হচ্ছে সে দেশের পরিস্থিতি। চট্টগ্রামের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের পুলিশ। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিনি জেলবন্দি রয়েছেন। তাঁর হয়ে আদালতে মামলা লড়ার জন্য কোনও আইনজীবী পাওয়া যায়নি মঙ্গলবার। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতও। এই আবহে নিউ ইয়র্কের এক আলোচনাচক্রে ভার্চুয়ালি হাসিনা অভিযোগ তুলেছেন, ইউনূসের পরিকল্পনাতে গণহত্যা চলছে বাংলাদেশে’ আবার ইউনূস বাংলাদেশের প্রশাসন ভেঙে পড়ার জন্য হাসিনাকেই দায়ী করেছেন। তবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে বেশিরভাগ তথ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার বলে মনে করছেন ইউনূস।
এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি ইউনূস অভিযোগ তোলেন, হাসিনার দেড় দশকের শাসনকালে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের প্রশাসনিক পরিকাঠামো। ফলে মানুষের আস্থা ফেরানো, গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা ফেরানোর বড় দায়িত্ব এসে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপর। হাসিনার সরকারের পতনের পর তদারকি সরকার গঠন হয়েছে সে দেশে। যার প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ইউনূস। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, কবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে। তবে ইউনূস জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে অর্থনীতি, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা এবং আমলাতন্ত্রে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
ঘটনাচক্রে সোমবার সন্ধ্যায় ওই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমটি ইউনূসের সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। তার পরের দিনই ভারত থেকে নিউ ইয়র্কের এক আলোচনাচক্রে ভার্চুয়াল বক্তৃতায় ইউনূসকে নিশানা করেন হাসিনা। ওই আলোচনাসভায় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী, ধর্মস্থান এবং ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের উপর হামলারও নিন্দা করেন হাসিনা। তিনি বলেন, ‘‘আজ আমার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে মুহাম্মদ ইউনূসই ছাত্র সমন্বয়কদের নিয়ে একটি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে গণহত্যায় লিপ্ত হয়েছেন। তাঁরাই মাস্টারমাইন্ড।”