ঋষি সুনককে সরে দাঁড়াতে বললেন বরিস জনসন। ফাইল চিত্র।
কনজ়ারভেটিভ পার্টির স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার না হওয়ার জন্য ঋষি সুনককে বার্তা দিলেন বরিস জনসন। ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিসের দাবি, এক মাত্র তাঁর নেতৃত্বেই আগামী ২০২৪ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে দল জয়ী হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে ফের তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরতে চান বলে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফের দাবি।
দায়িত্ব নেওয়ার দেড় মাসের মাথায় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে লিজ় ট্রাসের ইস্তফার পরে তাঁর সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের তালিকায় নাম রয়েছে দু’জনেরই। প্রধানমন্ত্রী পদে লিজের পূর্বসূরি বরিসের সঙ্গে ঋষিরই ‘মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ হতে পারে বলে সে দেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের দাবি। এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই ‘বার্তা’ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
একদা কনজ়ারভেটিভ পার্টির অন্দরে অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনসন ২০১৯ সালের নির্বাচনে দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেই একের পর এক বিতর্কে তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। করোনাকালে বিধি ভেঙে পার্টি করার ঘটনা সামনে আসার পরে ইস্তফা দিতে কার্যত বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ঘটনাচক্রে, সেই পার্টিগেট কেলেঙ্কারির জেরে গত ৬ জুলাই বরিসের নেতৃত্বের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ঋষি।
প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেও কনজ়ারভেটিভ পার্টির সদস্য এবং এমপিদের মধ্যে বরিসের অনুগামীর সংখ্যা এখনও অনেক। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সে কনজ়ারভেটিভ পার্টির ৩৫৭ জন এমপি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৭ জন শুক্রবার প্রকাশ্যে বরিসের প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছেন। তবে এমপিদের সমর্থনের নিরিখে প্রাথমিক ভাবে এগিয়ে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি। ভারতীয় বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণমূর্তির জামাইকে ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী চেয়েছেন ১০০ জনের বেশি টোরি (কনজ়ারভেটিভ পার্টি) এমপি।
যদিও শেষ পর্যন্ত বরিস প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবিদার হলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। সাম্প্রতিক একটি জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২৪ সালে কনজ়ারভেটিভদের হারিয়ে ক্ষমতা দখল করতে চলেছে লেবার পার্টি। ওই সমীক্ষায় শাসকদলের নেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতার নিরিখে এগিয়ে রয়েছেন বরিস। দলকে ক্ষমতায় ফেরানোর আাশায় শেষ পর্যন্ত টোরি এমপিদের বড় অংশ তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করতে পারেন টোরি পার্লামেন্ট সদস্যেরা। গত ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বরিস ইস্তফা দেওয়ার পরে পাঁচ দফায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অফ কমন্সের সদস্যদের ভোটাভুটিতে দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিজ় এবং ঋষির নাম চূড়ান্ত হয়েছিল। প্রত্যেক রাউন্ডেই সব থেকে কম ভোট পাওয়া প্রার্থীকে সরে যেতে হয়েছিল। ষষ্ঠ তথা চূড়ান্ত দফায় প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কনজ়ারভেটিভ দলের সদস্যের ভোটাভুটিতে ঋষিকে পরাস্ত করেন লিজ়। এ বার ভোটাভুটি হাউস অফ কমন্সের সদস্যদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার সম্ভাবনা।