ব্রিটেনের সংসদে বরিস জনসন। ছবি: পিটিআই
পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত বেআইনি— কাল ব্রিটেনের সুপ্রিম কোর্ট এই রায় ঘোষণা করার পরে আজ ফের পার্লামেন্ট তো বসলই। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশন ছেড়ে মাঝপথেই দেশে ফিরে আসতে হল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। যদিও সরকারি অ্যাটর্নি জেনারেল জিওফ্রে কক্স আজও নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আর এক প্রস্ত বিতর্ক তৈরি করলেন। তিনিই পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করার উপদেশ দিয়েছিলেন সরকারকে।
আজ পার্লামেন্টে তাঁর পদত্যাগের দাবি উঠলেও রীতিমতো উত্তেজিত কক্স সে দাবি উড়িয়ে বলেন, পার্লামেন্ট ‘অনৈতিক’ ভাবে একটি নির্বাচন আটকে দিতে চাইছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ বিচারপতিরা তাঁর মতামত খারিজ করে দিয়েছেন। এর পরেও কেন ইস্তফা দেবেন না কক্স, এ প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এমপি-দের বলেন, সুপ্রিম কোর্ট এ ক্ষেত্রে ‘নয়া আইন’ তৈরি করেছে। সেটা তারা করতেই পারে বলে জানিয়েছেন কক্স। কিন্তু বিরোধীরা সাধারণ নির্বাচনের পথে বাধা তৈরি করতে চাইছে অভিযোগ তুলে কক্স বলেন, ‘‘এই পার্লামেন্ট মৃত। এর কোনও অধিকার নেই এই সবুজ বেঞ্চে বসার। ভোটারদের মুখোমুখি দাঁড়ানো সাহস থাকা উচিত পার্লামেন্টের।’’ কক্সের একের পর এক মন্তব্যে আজ বসতে না বসতেই তুমুল হইহল্লা শুরু হয় পার্লামেন্টে। স্পিকার জন বার্কো অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, আপনার মতামত সুপ্রিম কোর্টে খারিজ হয়ে গিয়েছে। এমপি-রা ফের কাজ শুরু করুন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, বার্কো এমন ভাবে কথা বলেছেন, যাতে মনে হয়েছে আদপে পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করাই হয়নি!
আপাতত প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন সবাই। এ মাসের গোড়ায় টানা পাঁচ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করে বরিস জানিয়েছিলেন, তাঁর নিজস্ব নয়া নীতি নিয়ে রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ যাতে বক্তৃতা দিতে পারেন, তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সাধারণত রানির বক্তৃতার আগে পার্লামেন্টে বিরতি ঘোষণা করা হয়। কারণ নয়া সরকার তার নীতি ঘোষণা করে রানির বক্তৃতার মাধ্যমেই। কিন্তু এ বার বিরতির বদলে বরিস পার্লামেন্ট সাসপেন্ড করায় সদস্যরা প্রশ্ন করা, কমিটি তৈরি বা বিল পেশ করার সুযোগই পাচ্ছিলেন না।
সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট লেডি ব্রেন্ডা হেল কাল বলেছেন, ‘‘গণতন্ত্রের মূল ভিত্তির উপরে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব মারাত্মক।’’