বরিস জনসন। —ফাইল ছবি
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি হবে আগামিকাল। তার আগে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, তিনি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন, এ ব্যাপারে পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী। আর ৩১ অক্টোবরের সময়সীমার মধ্যেই সে ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে বেরনোর প্রক্রিয়া অর্থাৎ ব্রেক্সিটও সম্ভব হবে।
তবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডিইউপি এবং অন্য বিরোধী দলগুলি বরিসের চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারে বলেও জল্পনা চলছে। সে ক্ষেত্রে বিরোধী লেবার পার্টির অন্দরে যারা বিদ্রোহী এবং কনজ়ারভেটিভ দলের প্রাক্তন সদস্যদের বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে বরিসকে। প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্র আজ জানিয়েছেন, তিনি এবং তাঁর গোটা দল হাউস অব কমন্সের এমপি-দের ফোন করে করে বুঝিয়ে বরিসের চুক্তির জন্য সমর্থন পাকা করার কাজটি করবেন। ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে আজ মন্ত্রিসভার সঙ্গে একটি বৈঠকও করার কথা বরিসের।
এর মধ্যেই আজ জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ইইউ নেতাদের বলেছেন, শনিবার যদি ব্রিটিশ এমপি-রা ব্রেক্সিট চুক্তিতে সায় না দেন, তা হলে ব্রেক্সিটের জন্য অতিরিক্ত সময়সীমা দেওয়া ছাড়া পথ খোলা নেই। ইইউয়ের শীর্ষ বৈঠকে আঙ্গেলা অন্য নেতাদের বলেছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে অতিরিক্ত সময় চেয়ে ব্রিটেনের তরফে অনুরোধ এলে সেটা ভেবে দেখতেই হবে। তাঁর সংযোজন, ব্রেক্সিট একটি ঐতিহাসিক বিষয়। তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে
ব্রিটেনকে চুক্তি ছাড়া ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া উচিত হবে না। বিশেষ করে ব্রিটেনের তরফে যদি সময় চেয়ে আর্জি
আসে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ম্যার্কেলের সঙ্গে একমত হলেও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লদ ইয়ুঙ্কারের বিবৃতির সঙ্গে এই মন্তব্য খাপ খায় না। ইয়ুঙ্কার সম্প্রতি বলেছেন, ব্রেক্সিটের মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা তিনি ‘উড়িয়েই দিচ্ছেন।’ তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমাদের যদি চুক্তি হয়, চুক্তি হবে। সে ক্ষেত্রে সময় বাড়ানোর প্রশ্নই নেই।’’
যদিও ইয়ুঙ্কার প্রাথমিক ভাবে ব্রেক্সিটের মেয়াদ বৃদ্ধির পক্ষেই ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে বরিসের সঙ্গে নয়া চুক্তি আলোচনার পরে তাতে সর্বসম্মতিক্রমে ইইউ নেতারা সায় দেন। তার পরেই ইয়ুঙ্কার ইইউ নেতাদের বলেন, এ ক্ষেত্রে মেয়াদ বৃদ্ধির আলোচনা আখেরে কোনও সাহায্য করবে না।
যদিও ইইউয়ের নেতারা মেয়াদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না— এমন বার্তাই যেন ব্রিটিশ জনতার কাছে পৌঁছয়, বরিসকে তেমনটাই বুঝিয়েছেন ম্যার্কেল। ইইউ নেতাদের সঙ্গে এ দিনের ২৫ মিনিটের বৈঠকে বরিস আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছেন, ব্রেক্সিটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে তাঁর কোনও অসুবিধা হবে না। ইইউকে চুক্তির জন্য ধন্যবাদ দিয়ে তিনি ব্রাসেলসে স্কুলজীবনের কথা বলেন। ইইউয়ের অফিসারদের ছেলেমেয়েরা যে স্কুলে পড়ত, তিনি সেই ইউরোপীয় স্কুলেই পড়েছেন। ইউরোপের সঙ্গে ব্রিটেনের দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের কথাও বলেন বরিস। এ বার আগামিকাল কী হয়, তারই অপেক্ষায় ব্রিটেন।