মার্গারেট অ্যাটউড ও বার্নার্দিন এভারিস্তো। মঙ্গলবার লন্ডনে। রয়টার্স
পাঁচ ঘণ্টার দীর্ঘ বৈঠকের পরে বেরিয়ে বিচারকেরা জানালেন, নিয়ম ভেঙেছেন তাঁরা। ২০১৯-এর বুকার বিজেতা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে দু’জনকে — কানাডার মার্গারেট অ্যাটউড এবং ব্রিটেনের বার্নার্দিন এভারিস্তো। ২৭ বছর পরে বুকারে যুগ্ম বিজেতা হল।
সলমন রুশদির ‘কিশট’-সহ ছ’টি উপন্যাসের মধ্যে থেকে অ্যাটউডের ‘দ্য টেস্টামেন্টস’ এবং এভারিস্তোর ‘গার্ল, ওম্যান, আদার’— এই দু’টি উপন্যাস পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। বিচারকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান পিটার
ফ্লোরেন্স বলেন, ‘‘কমিটির ‘লিটারারি ডিরেক্টর’ গ্যাবি উড স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, শুধু একটি উপন্যাসই বেছে নিতে হবে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার আলোচনার পরে আমরা বুঝতে পারি, সেটা একটা অসম্ভব কাজ।’’
এভারিস্তো প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ লেখিকা এবং প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্রিটিশ লেখক যিনি বুকার পুরস্কার পেলেন। তাঁর উপন্যাস বারোটি ভিন্ন স্বরের সমষ্টি। এভারিস্তোর কথায়, ‘‘আমরা, অর্থাৎ ব্রিটিশ কৃষ্ণাঙ্গ মহিলারা, ভাল করেই জানি যে, আমরা যদি আমাদের কথা সরবে না-বলি, কেউ আমাদের কথা বলবে না। আমাদের কণ্ঠস্বর শোনাই যাবে না। তাই উপন্যাসে ‘বহু-স্বর’ (পলিফোনি) ব্যবহার করেছি।’’
৭৯ বছর বয়সি অ্যাটউড বুকারজয়ী প্রবীনতম লেখক। ১৯৮৬ সালে বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিল অ্যাটউডের সব থেকে জনপ্রিয় উপন্যাস ‘দ্য হ্যান্ডমেডস টেল’। এ বারের বুকারজয়ী তাঁর ‘দ্য টেস্টামেন্টস’ সেই উপন্যাসেরই পরের পর্ব, প্রথম কাহিনিটি শেষ হওয়ার ১৫ বছর পরে শুরু তার ঘটনাক্রম। ২০০০ সালে বুকার জিতেছিল অ্যাটউডের ‘দ্য ব্লাইন্ড অ্যাসাসিন’। বুকারের ইতিহাসে তিনি চতুর্থ লেখক, যিনি এই পুরস্কার দু’বার জিতলেন।
পুরস্কার ভাগ করে নিতে কেমন লাগল? অ্যাটউডের কথায়, ‘‘ভাগ্যিস! এই বুড়ো বয়সে আমি একা একা এই খেতাব জিতলে খুবই লজ্জায় পড়ে যেতাম।’’ আর এভারিস্তো বললেন, ‘‘এত বড় মাপের এক জন লেখিকার সঙ্গে পুরস্কার ভাগ করে নেওয়ার আলাদা সম্মান রয়েছে। নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করছি।’’ তিনি জানান, গৃহঋণ শোধ করবেন পুরস্কারের ২৫ হাজার পাউন্ড দিয়ে। অ্যাটউড জানিয়েছেন, পুরো টাকাটাই দান করবেন কানাডার ভূমিপুত্রদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থাকে।