বাঁ দিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ডান দিকে মেগান বোল্ডিন। —ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনার সরকারে পতনের পরেই ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পাঠিয়েছিলেন দলীয় প্রতিনিধিদের। এ বার আমেরিকার ভোটে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর ওয়াশিংটনের আস্থা অর্জনে সক্রিয় হলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ঢাকায় আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মেগান বোল্ডিনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চা-চক্রে অংশ নেন আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের স্থায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। বিএনপির তরফে জানানো হয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জাতীয় সংসদের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে মেগানের বাসভবনে আয়োজিত ওই চা-চক্রে।
চলতি মাসের গোড়ায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগেই রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে সরব হয়েছিলেন। এক্স পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘অশান্ত বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সংখ্যালঘুরা দুষ্কৃতীদের হাতে প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছেন। লুঠপাট চলছে। এর তীব্র নিন্দা করছি।” প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের পরে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চাপে পড়েছে বলেই কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা। তাঁদের মতে, এই আবহে আমেরিকার রাষ্ট্রদতের সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বের বৈঠক ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
বস্তুত, ইউনূসের জমানায় বাংলাদেশের ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশ’ নিয়ে ইতিমধ্যেই সুর বদলেছে ওভাল অফিস। জো বাইডেনের আমলে ধারাবাহিক ভাবে হাসিনার সমালোচনা করে চলা আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক বুধবার স্পষ্ট ভাষায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই সাংবাদিকদের স্বাধীনতা এবং অধিকারে হস্তক্ষেপ করা চলবে না। সম্প্রতি তিন দফায় বাংলাদেশের ১৬৭ সাংবাদিকের প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বেদান্ত পটেল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা চাই সব সাংবাদিকের স্বাধীনতা ও অধিকারকে যথাযথভাবে সম্মান দেখানো হোক।’’
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প নিযুক্ত নতুন গোয়েন্দা অধিকর্তা তুলসী গ্যাভার্ডও ‘হিন্দু নির্যাতন’ নিয়ে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশকে। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা বেশ কিছু দিন ধরেই গুরুতর অসুস্থ। তার পুত্র তারেক এখনও বিদেশে। এই পরিস্থিতিতে কার্যত মহাসচিব আলমগীরের হাতেই দলের নিয়ন্ত্রণ। ঘটনাচক্রে বুধবারই তিনি ভারতের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন। ঢাকায় সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত। তা না হলে জাতি হিসেবে আমরা অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হব।’’