(বাঁ দিকে) শেখ হাসিনা। মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের সংবিধানে আর ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দের প্রয়োজন নেই। বৃহস্পতিবার মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশ হাই কোর্টে পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনী বাতিলের জন্য সওয়াল করে এ বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছে।বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশিস রায়চৌধুরীর বেঞ্চে সওয়াল করতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘‘পঞ্চদশ সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের বুকে কুঠারাঘাত করা হয়েছে।’’ তবে প্রাথমিক ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে তিনি এ ক্ষেত্রে তুলে ধরেছেন ‘মৌলিক অধিকারের’ প্রশ্ন। কারণ, শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ওই সংশোধনীর মাধ্যমেই ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিয়ন্ত্রণে জাতীয় সংসদের নির্বাচন আয়োজন’ করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হয়েছিল।
তবে এর পরেই অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামানের মন্তব্য, ‘‘ধর্মনিরপেক্ষ’ শব্দটা রাখার দরকার নেই। এই দেশের ৯০ ভাগ মুসলমান। আগে আল্লার প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ছিল। এটি যে ভাবে আগে ছিল, সে ভাবেই চাইছি।’’ প্রসঙ্গত, হাসিনার জমানায় ২০১১ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ হয়েছিল। ওই সংশোধনীতে সংবিধানে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমানের জমানায় ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা’র উল্লেখ থাকলেও পরবর্তী সময় জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং জেনারেল হুসেন মহম্মদ এরশাদের আমলে ‘কোপ’ পড়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতায়। পঞ্চদশ সংশোধনীতে ওই চারটি বিষয় ‘মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি’ হিসাবে পুনর্বহাল করা হয়েছিল। কিন্তু বুধবারের শুনানিতে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পালাবদলের বাংলাদেশে আর মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমাজতান্ত্রিক চেতনার প্রয়োজন নেই।