পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। ছবি- পিটিআই।
ইসলামাবাদের সুরে ওয়াশিংটন সুর মেলায়নি। কোনও সরকারি বিবৃতি দিতে অস্বীকার করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদও। তাই কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ (ইউএনএইচআরসি)-কে দিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার চেষ্টা শুরু করেছে পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক সংস্থাটিকে বোঝানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন পাক বিদেশসচিব তেহমিনা জানুজাকে। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে এক সময় পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধিও ছিলেন তেহমিনা। আন্তর্জাতিক সংস্থার হাই কমিশনার মিশেল বাচেলেতকে চিঠি লিখেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। দিল্লি, জেনেভা ও নিউ ইয়র্কে ভারতীয় কূটনীতিকদের সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে।
ভারতীয় কূটনীতিকদের একাংশ জানিয়েছেন, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪২তম অধিবেশন শুরু হচ্ছে রাষ্ট্রপুঞ্জের ৪৭ সদস্য দেশের মানবাধিকার পরিষদের। সেই অধিবেশনেই কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করে যাতে ভারতের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব আনা যায় ও তা পাশ করানো যায়, ইসলামাবাদের তরফে তার সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। ভারতও ওই পরিষদের সদস্য। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাক সূত্রের খবর, তাঁর ভাষণের একটি বড় অংশ জুড়েই থাকবে কাশ্মীর ও সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি। সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। ইসলামাবাদ চাইছে, ওই সময়েই কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করে ভারতের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব পাশ হোক রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে।
রাষ্ট্রপুঞ্জে এক ভারতীয় কূটনীতিকের কথায়, ‘‘সাধারণ পরিষদে আমল পাবে না বুঝেই, পাকিস্তান এই চেষ্টা চালাচ্ছে।’’
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমানো জি-৭-এর সাফল্য: হোয়াইট হাউস
আরও পড়ুন- কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, মন্তব্য রাহুল গাঁধীর, হিংসার জন্য পাকিস্তানের দিকে আঙুল
তবে মানবাধিকার পরিষদকে বোঝানোর যাবতীয় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসলামাবাদ। গত ২১ অগস্ট পরিষদের হাই কমিশনার মিশেল বাচেলেতকে একটি চিঠিতে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি লিখেছেন, ‘‘৩৭০ ধারা রদের পর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে ৮ লক্ষ ৮০ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। বিশ্বের আর কোনও এলাকায় এত সেনা সমাবেশ নেই। গত ৫ অগস্ট থেকে আরও ৬ হাজার মানুষকে কাশ্মীরে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রাজনীতিক ও পেশাদাররাও। তা ছাড়াও সেখানে শিশু অপহরণের ঘটনা বেড়েই চলেছে।’’
ওই চিঠি ভারত-সহ মানবাধিকার পরিষদের সব সদস্য দেশের হাতেই পৌঁছেছে। ভারতও তৈরি হচ্ছে তথ্যপ্রমাণ-সহ জবাবের জন্য। কূটনীতিকরা বলছেন, ‘‘মানবাধিকার পরিষদেও ওই প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা কমই।’’