বিমান হামলায় নিহত গ্রামবাসীরা। ছবি পিটিআই।
মায়ানমারে সেনা বনাম বিদ্রোহী জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়ান্স’-এর লড়াইয়ের আঁচ এ বার বাংলাদেশ সীমান্তে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ সীমান্তের কাছে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে দু’তরফের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। বুধবারও তা দিনভর চলেছে। গোলাগুলির আওয়াজে মায়ানমারে রাখাইন প্রদেশের সীমান্তবর্তী দমদমিয়া, জাদিমোরার মতো গ্রামগুলির বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন (ওএইচসিএইচআর)-এর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মায়ানমারে গৃহযুদ্ধে অন্তত ১২ জন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গণহত্যা পরিস্থিতি থেকে সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রধান ফলকার টুর্ক। রাখাইন প্রদেশই রোহিঙ্গাদের প্রধান আবাসভূমি। গত দেড় দশক ধরে বৌদ্ধপ্রধান মায়ানমারে মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে। কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী বর্তমানে বাংলাদেশে রয়েছেন।
গত নভেম্বর থেকে সে দেশের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী— ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ), ‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়্যান্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-র নয়া জোট ‘ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ সামরিক জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ‘অপারেশন ১০২৭’। পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হয় ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ), পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ)। উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম মায়ানমারের শান, চিন আর সাগিয়াং প্রদেশের পরে মধ্য-পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইনেও শুরু হয়েছে সংঘর্ষ। ঘটনাচক্রে, ‘আরাকান আর্মি’ এবং কেএলডিএফ-এর বড় ঘাঁটি রয়েছে সেখানে।