Dawood Ibrahim

করাচিতে দাউদের থাকার কথা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অস্বীকার করল পাকিস্তান

দাউদ যে করাচির বাসিন্দা, বহু বছর ধরে তা দাবি করে আসছে দিল্লি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

করাচি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২০ ১২:০৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

করাচিতে দাউদের ঠিকানা চিহ্নিত করেছে পাক প্রশাসন। শনিবার রাতে পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে এ খবর সামনে আসার পরই সর্বত্র হইচই পড়ে যায়। বলা হয়, এত দিনে দেশের মাটিতে মাফিয়া ডনকে আশ্রয় দেওয়ার কথা মানল পাকিস্তান। কিন্তু তার পর ২৪ ঘণ্টায় কাটেনি। নিজেদের অবস্থান পাল্টে ইসলামাবাদ জানিয়ে দিল দাউদ ইব্রাহিম পাকিস্তানে রয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যে খবর ছড়িয়েছে তা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর।

রবিবার সকালে রেডিয়ো পাকিস্তানের তরফে টুইট করে বলা হয়, তালিকাভুক্ত কিছু মানুষ পাকিস্তানে রয়েছেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যে দাবি করছে, বিদেশমন্ত্রক তা খারিজ করে দিয়েছে। বিদেশমন্ত্রকের একটি বিবৃতি টুইটারে তুলে ধরে তারা। তাতে বলা হয়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় বর্তমানে তালিবান, আইসিল (দয়েশ) এবং আলকায়দার যে সমস্ত সদস্যের নাম রয়েছে এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ যাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, গত ১৮ অগস্ট বিদেশমন্ত্রকের তরফে তাদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। এটা রুটিন প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে দীর্ঘ দিন ধরেই এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে আসছে বিদেশমন্ত্রক। ২০১৯ সালে শেষ বার এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।’’

পাক বিদেশমন্ত্রকের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘‘এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকার নতুন ধরনের নিষেধাজ্ঞামূলক পদক্ষেপ করতে যাচ্ছে বলে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, যা বাস্তবসম্মত নয়। ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে আবার দাবি করছে, পাকিস্তান নাকি মেনে নিয়েছে তালিকাভুক্ত কিছু ব্যক্তি (দাউদ ইব্রাহিম) তাদের দেশে রয়েছে, যা ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিমূলক।’’ কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় দাউদের নাম থাকলেও, করাচি এবং নুরবাদে পাহাড়ি এলাকায় তার বাড়ির ঠিকানা, কোত্থেকে এল, তা পাক প্রশাসনের নজরই বা এড়িয়ে গেল কী ভাবে, ইসলামাবাদের তরফে তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

Advertisement

পাক বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতি।

আরও পড়ুন: দাউদের ঠিকানা পাকিস্তানেই, কবুল করল ইসলামাবাদ​

Advertisement

১৯৯৩ সালে মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূল চক্রী, ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার পিছনে মাথা হিসেবে অভিযুক্ত দাউদ যে করাচির বাসিন্দা, বহু বছর ধরে তা দাবি করে আসছে দিল্লি। দাউদের যে ঠিকানার কথা পাক সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে উঠে অসেছে, অনেক আগেই সেই ঠিকানা ইসলামাবাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। জানিয়ে দেওয়া হয়, করাচিতে পাক সেনাবাহিনী এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের নাকের ডগাতেই বাস করে দাউদ। দীর্ঘদিন তাকে নিরাপত্তা দিয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। পাকিস্তান যদিও এত দিন তা অস্বীকার করে এসেছে।

আরও পড়ুন: সুস্থতার হার প্রায় ৭৫ শতাংশ, ৩০ লক্ষ ছাড়াল মোট আক্রান্ত​

তাই গতকাল সে দেশের সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে ঠিকানা-সহ দাউদ ইব্রাহিমের উল্লেখ থাকায় শোরগোল শুরু হয়। বলা হয়, বিশ্ব জুড়ে আর্থিক অপরাধ রুখতে নীতি তৈরি ও কার্যকর করে যে সংস্থা, সেই ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করেছে। দেশের মাটিতে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিস্ক্রিয় করতে ইসলামাবাদ এখনও পর্যন্ত কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। ২০২০-র গোড়ার দিকে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের। করোনা আবহে সেই সময়সীমা পিছিয়ে গেলেও, ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অনুদান বন্ধ হয়ে যাবে তাদের। তাই চাপের মুখে পড়েই দাউদের বিষয়টি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement