(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত দু’জন কূটনীতিককে বরখাস্ত করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। সময়ের আগেই ওই দুই কূটনীতিককে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দেশে ফিরতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে মুহাম্মদ ইউনূস পরিচালিত অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম কোনও কূটনীতিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হল। যদিও কেন এই পদক্ষেপ, সেই কারণ স্পষ্ট করা হয়নি।
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন শাবান মাহমুদ। কলকাতার দূতাবাসে ছিলেন রঞ্জন সেন। দু’জনকেই কাজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১৭ অগস্ট এই নির্দেশিকা জারি করেছে ইউনূস সরকার। রঞ্জনের কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৬ সালে।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শেখ হাসিনা। দেশ ছাড়েন তিনি। হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিলেন। সেই থেকে ভারতেই রয়েছেন। মনে করা হয়েছিল, সাময়িক ভাবে ভারতে আশ্রয় নিচ্ছেন হাসিনা। তাঁর লন্ডনে চলে যাওয়ার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছিল বিভিন্ন সূত্রে। কিন্তু ব্রিটেন থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। পরে হাসিনার পুত্র সাজিব ওয়াজেদ জয় জানান, আরও কিছু দিন ভারতেই থাকবেন তাঁর মা। ভারত সরকার জানিয়েছে, হাসিনাকে সময় দিচ্ছে নয়াদিল্লি। আপাতত তিনি রাজধানীতেই কোনও গোপন আশ্রয়ে রয়েছেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। সেই সরকারের প্রধান হয়েছেন নোবেলজয়ী ইউনূস। সরকার পড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের নানা খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি। পরে ইউনূস এ বিষয়ে ভারতে আশ্বস্ত করেন। তবে অশান্তির আবহে বাংলাদেশে কর্মরত অ-জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের সপরিবার দেশে ফিরিয়ে এনেছিল ভারত।
কিছু দিন আগে হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ফলে তিনি ভারতে কত দিন নিরাপদে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এই আবহে ভারতের দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের বরখাস্ত করে কি নয়াদিল্লিকে পরোক্ষে কোনও বার্তা দিতে চাইল বাংলাদেশ? কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ তেমনটাই মনে করছেন। হাসিনা প্রসঙ্গে দিল্লি আগামী দিনে কী অবস্থান গ্রহণ করে, সে দিকে নজর থাকবে।