শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া থাকা তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য আজ ভারতকে অনুরোধ করল বাংলাদেশ। দু’দেশের মধ্যে প্রায় ১২ বছর পর হওয়া যুগ্ম নদী কমিশনের তিন দিনের বৈঠকটি শেষ হওয়ার পরে প্রকাশিত বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। ভারতের তরফে ঢাকাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, তারা এই চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য সব রকম চেষ্টা করবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের আগে আজকের এই বৈঠক যথেষ্ট বার্তাবহ বলে মনে করা হচ্ছে।
আজ বেশি রাতে বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়। তাতে তিস্তা ছাড়াও ভারত থেকে বাংলাদেশে বয়ে যাওয়া অন্য নদীগুলির কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে প্রকাশ, বিশেষ করে গঙ্গা, তিস্তা, মনু, মুহুরি, খোয়াই, গুমতি, ধরলা, দুধকুমার এবং কুশিয়ারা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বন্যার সময়ের তথ্য বিনিময় ছাড়াও নদী তীরবর্তী এলাকাকে সুরক্ষিত রাখা এবং সাধারণ অববাহিকা অঞ্চলের সংরক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কুশিয়ারা নদী থেকে জল প্রত্যাহার করে নেওয়া সংক্রান্ত চুক্তিপত্রে সই করতে উদ্যোগী হতে বাংলাদেশের প্রতিমন্ত্রী ভারতকে অনুরোধ করেছেন। ভারতের মন্ত্রী জানান বিষয়টি বিবেচনাধীন।
সূত্রের খবর, ২০২৬ সালে গঙ্গা জল বণ্টন চুক্তির মসৃণ ভাবে পুনর্নবীকরণ করা এবং বাংলাদেশে যাওয়া গঙ্গাজলের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা নিয়ে সমীক্ষা করতে দু’পক্ষই সহমত হয়েছে। সূত্রের খবর, এ ছাড়া তিতাসের দূষণ দূর করার উদ্যোগ, ফেনি নদীর জলকে ফিরিয়ে নিয়ে ত্রিপুরার সাবরুম শহরে বিশুদ্ধ জল সরবরাহ প্রকল্পে ব্যবহার করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে ঐকমত্য হয়েছে দু’দেশের। সূত্রের খবর, এই বিষয়গুলি নিয়ে চূড়ান্ত সমঝোতা পত্র সই হবে শেখ হাসিনার আসন্ন নয়াদিল্লি সফরে।
প্রায় ১২ বছর মন্ত্রী পর্যায়ে ভারত বাংলাদেশ নদী কমিশনের বৈঠক হয়নি। তিস্তা চুক্তি রূপায়ণ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক টালবাহানার ছায়া পড়েছিল নদী কমিশনে। কিন্তু হাসিনা দিল্লি আসার প্রাক্কালে এই বৈঠক হওয়ার বিষয়টিকেই যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক হিসাবে দেখছেন দু’দেশের কর্তারা। আজ দুপুরে নয়াদিল্লির সুষমা স্বরাজ ভবনে বাংলাদেশের জলসম্পদ দফতরের দুই মন্ত্রী জহিদ ফারুখ ও এনামুল হক শামিমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত। নৈশভোজেও কথা বলেন তাঁরা। তার পরে বিবৃতিটি প্রকাশ হয়।