মুক্তি পাচ্ছেন বিএনপি নেত্রী তথা বাংলাদেশের বিরোধী দলনেত্রী খালেদা জিয়া। —ফাইল চিত্র
দুর্নীতির অভিযোগে সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দিচ্ছে বাংলাদেশের সরকার। তবে এই ছ’মাসের মধ্যে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার ৪০১ ধারায় এই দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়া-সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। সেই মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এই মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। তার পর থেকেই জেলবন্দি ছিলেন বিএনপি সুপ্রিমো। তবে চিকিৎসার জন্য ভর্তি ছিলেন ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘‘খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মাধ্যমে এবং আমার কাছেও আবেদন করা হয়েছিল তাঁকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। আবেদনে তাঁকে লন্ডনে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। পরে খালেদা জিয়ার ভাই শামিম এস্কেন্দার, বোন সেলিমা ইসলাম ও বোনের স্বামী রফিকুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও একই আবেদনের জানিয়েছিলেন।’’
আরও পড়ুন: দেশে পাঁচশো ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা, বিশ্বে মৃত ১৬ হাজার: করোনা আপডেট এক নজরে
এই ছ’মাসের মধ্যে প্রয়োজন হলে খালেদা জিয়া হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবেন কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে যেতে পারবেন। কিন্তু হাসপাতালে যদি ভর্তিই হতে হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্নত হাসপাতালে তিনি ভর্তি রয়েছেন। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।’’
মুক্তির সিদ্ধান্তে বিএনপি নেতৃত্ব খুশি হলেও অসন্তোষ রয়েছে শর্ত চাপানোয়। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘এর অর্থ তাঁকে হাউস অ্যারেস্ট করা হবে। যে ভাবেই হোক তাঁর চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া দরকার। আপাতত এটুকুই বলা ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না। পুরো আদেশটা জানার পর প্রতিক্রিয়া দেব।’’
আরও পড়ুন: পিছোচ্ছে অলিম্পিক্স, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সম্মত আইওসি প্রধান
জানা গিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া শেষ হলেই মুক্তি খালেদা জিয়ার। তাঁর মুক্তির সুপারিশের ফাইল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পৌঁছে গিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া আগামিকাল দুপুরের মধ্যেই শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মহম্মদ শহীদুজ্জামান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আশা করি বুধবারের মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।’’