নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র
ক্রমশ শীতল হচ্ছে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক। এর আগে বাংলাদেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর ভারত সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়েছে। এ বারেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে গেল দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। আজ থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল বহু দিন থমকে থাকা জল বিষয়ক আলোচনা। দু’দেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া ছ’টি নদীর জল বণ্টন নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। কিন্তু তা পিছিয়ে গেল অনির্দিষ্ট কালের জন্য।
কেন পিছলো এই বৈঠক?
বিদেশ মন্ত্রক অথবা কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলা হয়নি। সূত্রের খবর, আগামী বছরের কোনও এক সময়ে এই বৈঠকটি হবে। অন্য দিকে ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে ‘ছাড়পত্র’ না পাওয়ায় আপাতত এই বৈঠক হচ্ছে না। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনকে ঘিরে গভীর অসন্তোষ তৈরি হয়েছে সে দেশে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদের দুই কক্ষে এবং গত কাল একটি জনসভাতেও বার বার বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানকে যে ভাবে এক বন্ধনীতে রেখেছেন, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছে হাসিনা সরকার। বাংলাদেশের এক কর্তার কথায়, ‘‘যার সঙ্গে লড়াই করে আমরা স্বাধীন হলাম, আজ তাদের সঙ্গে একাসনে বসাচ্ছে ভারত! আর এই ভারতই সেই মুক্তিযুদ্ধে আমাদের শরিক ছিল।’’ এই অসন্তোষের ছায়া পড়েছে প্রস্তাবিত বৈঠকটিতে।
বাংলাদেশের সঙ্গে নদী কমিশনের বৈঠকে মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরি ও দুধকুমার নদীর জলপ্রবাহের তথ্য বিনিময়ের কথা ছিল। প্রথম দিনে যৌথ কমিটি ও দ্বিতীয় দিন কারিগরি কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। গত অগস্টে ঢাকায় অনুষ্ঠিত জলসম্পদ সচিবদের বৈঠকে তিস্তা ও
ফেনির পাশাপাশি ওই ছ’টি নদী নিয়েও আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৮৫ সালে প্রথম বার এ ছ’টি নদীর প্রবাহ নিয়ে একে অন্যের সঙ্গে তথ্য বিনিময় করেছিল বাংলাদেশ ও ভারত। তখন থেকেই আলোচনা চলছে, কিন্তু জলবণ্টন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।