২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে বিজিবি এবং বিএসএফের বৈঠক। —ফাইল চিত্র।
অনুষ্ঠিত হতে চলা বিএসএফ এবং বিজিবির বৈঠকে বাংলাদেশের কথা ‘টোন’ আলাদা হবে। বুধবার এমনই মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর প্রথম বারের জন্য দিল্লিতে শীর্ষস্তরের বৈঠকে বসছে ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী। আগামী ১৭-২০ ফেব্রুয়ারি ওই বৈঠকে মুখোমুখি বসবেন সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-র প্রধান দলজিৎ সিংহ চৌধরি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-র প্রধান মুহাম্মদ আশরাফ-উজ়-জ়ামান।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, বিএসএফ এবং বিজিবির বৈঠক নিয়ে বুধবার প্রস্তুতি পর্যালোচনায় বসে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। বিভিন্ন মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের নিয়ে বাংলাদেশের সচিবালয়ে ওই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়, এ বারের বৈঠকে নতুনত্ব কী থাকছে? জবাবে তিনি বলেন, “নতুনত্ব কোনটা চাইছেন? এখন নতুনত্ব হল, আগে যে ভাবে কথা বলা হত, এ বারে কথার টোন আলাদা হবে।” জাহাঙ্গীরের বক্তব্য, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে বিএসএফকে উদ্যোগী হতে হবে। এ ছাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ফেনসিডিল-সহ অন্য মাদক পাচার এবং অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয় নিয়েও তাঁরা বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করতে চান।
সম্প্রতি ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে বিএসএফ কাঁটাতার বসাতে উদ্যোগী হলে বিজিবি তাতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারত এবং বাংলাদেশের সীমান্তে একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখনও কাঁটাতারবিহীন রয়ে গিয়েছে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার, দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার এবং গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের অধীনে থাকা বেশ কিছু অঞ্চলে কাঁটাতার নেই। মালদহের কালিয়াচকে এবং তার পরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে কাঁটাতার বসানোর সময় বিজিবির বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই বিতর্কের আবহে বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় বর্মাকে ডেকে পাঠায় মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। পরের দিনই আবার দিল্লিতে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার নুরুল ইসলামকে ডেকে পাঠায় বিদেশ মন্ত্রক।
এই বিতর্কের আবহে আগামী মাসে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী শীর্ষস্তরের বৈঠক হতে চলেছে দিল্লিতে। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গত সপ্তাহে জানান, অপরাধ বন্ধ করতে সীমান্তে বেড়া দেওয়া দরকার। মানব পাচার, গরু পাচার এবং অন্য যে ধরনের অপরাধগুলি চলে, সেগুলি বন্ধ করার প্রয়োজন রয়েছে। সীমান্তকে অপরাধমুক্ত করার লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার বিষয়ে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তি রয়েছে। দু’দেশের চুক্তি মেনেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার কাজ চলছে।’’