Bangladesh Protest

বাংলাদেশে দেখলেই গুলি চালানোর নির্দেশ সেনাকে! কার্ফুর মাঝেই শনিতে নিহত আরও সাত

শুক্রবার রাতেই বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে কার্ফু। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছিল সেই কার্ফু, যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় দোকান-বাজার সারতে পারেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ২৩:৩১
Share:

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

বাংলাদেশে কার্ফু জারি করা হয়েছিল আগেই। এ বার আরও কড়া পথে হাঁটল প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার সরকার। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, সারা বাংলাদেশে ‘শুট অন সাইট’ জারি করেছে সরকার। অর্থাৎ দেখামাত্রই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হল সেনাবাহিনীকে। কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে যে আন্দোলন চলছে, তাতে শনিবার পর্যন্ত ১১৪ জন মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স-সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। বিবিসি নিউজ় বাংলা দাবি করেছে, শনিবার সে দেশে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মী।

Advertisement

শুক্রবার রাতেই বাংলাদেশে জারি করা হয়েছে কার্ফু। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছিল সেই কার্ফু, যাতে সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় দোকান-বাজার সারতে পারেন । সে কথা জানিয়েছেন শাসকদল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘চরম অবস্থায়’ জনতার উপর গুলি চালানোর অনুমতিও দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। এই আবহে রবি এবং সোমবার সারা দেশে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। কার্ফু জারি হওয়ার পর থেকে সে দেশের রাস্তা সুনসান। শনিবার সকাল থেকে রাস্তায় রাস্তায় টহল দিয়েছে সেনা। ঢাকার রাস্তায় দেখা গিয়েছে সেনার সাঁজোয়া গাড়ি। আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্ফু চলবে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কার্ফুর কারণে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে বলেই মনে করছে সরকার। যদিও বিবিসি নিউজ় বাংলার দাবি, শনিবার সাত জনের মৃত্যু হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে ওই সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, শনিবার সেখানে সাত জনের মৃতদেহ পৌঁছেছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। ওই সংবাদমাধ্যমের আরও দাবি, সাভারেও এক জনের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক শুক্রবার বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশ সরকার যদিও নরমে-গরমে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করে চলেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তথা শীর্ষ স্তরের নেতা নাহিদ ইসলামকে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বেশ কয়েক জন নেতাকেও আটক এবং গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের একাংশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ‘সমান্তরাল প্রচেষ্টা’ চালাচ্ছে হাসিনার সরকার। শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় আন্দোলনের দু’জন সমন্বয়কের সঙ্গে ‘শীর্ষ স্থানীয় সরকারি আধিকারিকদের’ একটি বৈঠক হয়েছে বলে বিবিসির খবরে জানানো হয়েছে।

রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে কোটা সংস্কার নিয়ে মামলার শুনানি হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুদ্দিন মানিকের দাবি, কোটা সংস্কার নিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিলের আবেদনই করবে সরকার। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন বড় আকার নিয়েছিল। সেই আন্দোলনে চাপে পড়ে সংসদে দাঁড়িয়ে সব ধরনের সংরক্ষণ বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। কিন্তু সংরক্ষণ বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে যান কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দেয়। আবার আগের মতো সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হয়ে যায় বাংলাদেশে। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে হাসিনা সরকার। সেই মামলার শুনানিই হবে রবিবার। আপাতত বাংলাদেশ-সহ গোটা দুনিয়ার চোখ সে দিকে।

এই আবহে অশান্ত বাংলাদেশ থেকে শনিবার ভারতে ফিরেছেন আরও ৭৭৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে। তবে মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পাঠরত ৪,০০০-এর বেশি ভারতীয় পড়ুয়া এখনও সে দেশে রয়েছেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে পেট্রাপোল দিয়ে সে দেশে রফতানিও বন্ধ করা হয়েছে। আমদানি চলছে ধীর গতিতে।

টহল সেনার

শনিবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার চেহারা বদলে গিয়েছে। রাস্তাঘাট সুনসান। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে বাংলাদেশি সেনা। কার্ফুর মাঝে বাড়ি থেকে বেরোচ্ছেন না কেউ। আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে কার্ফু চলবে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, শনিবার সকাল থেকে ঢাকার রাস্তায় কোনও জমায়েত দেখা যায়নি। সেনার টহলে সুনসান রাস্তাঘাট। বেলা ১২টা নাগাদ কার্ফু কিছুটা শিথিল করার ঘোষণা করা হয়। ঘণ্টা দুয়েকের জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। অন্যান্য জরুরি কাজ থাকলে তা-ও মিটিয়ে ফেলতে হবে দু’ঘণ্টার মধ্যে।

রাস্তায় সেনার ট্যাঙ্ক

শুক্রবার গভীর রাত থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় নেমে পড়ে বাংলাদেশ সেনার সাঁজোয়া ব্রিগেড। এর আগে শেষ ২০০৯ সালে বাংলাদেশের রাস্তায় ঘুরেছিল সেনার সাঁজোয়া গাড়ি। হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যেই ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানা ব্যারাকে এই বিদ্রোহ করেছিল সে দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিডিআর)। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আরও কয়েকটি বিডিআর ক্যাম্পে। পিলখানায় বিডিআরের বিদ্রোহী জওয়ানেরা ৭৪ জনকে হত্যা করেছিলেন। যার মধ্যে ৫৭ জনই ছিলেন বিডিআর-এর দায়িত্ব পালন করতে ডেপুটেশনে আসা সেনা অফিসার। অফিসারদের মেসে লুটপাটও করেছিলেন বিদ্রোহী জওয়ানেরা। খুন করা হয় কয়েক জন অফিসারের স্ত্রী এবং পরিজনকেও। পরে বিডিআর-এর নাম বদলে হয় বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ)। সেই সময় পরিস্থিতি সামলাতে ঢাকায় মোতায়েন করা হয়েছিল সেনা। আর্মাড রেজিমেন্ট সাভার সেনানিবাস থেকে আনা হয়েছিল ট্যাঙ্ক। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ) জঙ্গিরা গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালালে তাদের মোকাবিলায় সাঁজোয়া গাড়ি পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় ঢাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সামগ্রিক ভাবে সেনার দখলে যায়নি।

সমন্বয়ক আটক

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এবং তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ শুরু করল শেখ হাসিনার সরকার। শুক্রবার মধ্যরাতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তথা শীর্ষ স্তরের নেতা নাহিদ ইসলামকে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক জন সমন্বয়ক শনিবার বিবিসিকে জানিয়েছেন, নাহিদকে শুক্রবার মধ্যরাতে আটক করা হয়। বাকি সমন্বয়কদের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তিনি এখনও নিশ্চিত নন বলে জানিয়েছেন বলে প্রকাশিত খবরে দাবি। প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বেশ কয়েক জন নেতাকেও আটক এবং গৃহবন্দি করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পাশাপাশি, আন্দোলনকারীদের একাংশের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ‘সমান্তরাল প্রচেষ্টা’ চালাচ্ছে হাসিনার সরকার। শুক্রবার গভীর রাতে ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘পদ্মা’য় আন্দোলনের দু’জন সমন্বয়কের সঙ্গে ‘শীর্ষস্থানীয় সরকারি আধিকারিকদের’ একটি বৈঠক হয়েছে বলে বিবিসির খবরে দাবি। তবে সেই বৈঠকে ধৃত নাহিদ হাজির ছিলেন না। হাসিনা সরকার এই পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের ‘নরমপন্থী’ অংশকে হিংসাত্মক কার্যকলাপ থেকে বিরত রাখার কৌশল নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

দেশে ফিরছেন পড়ুয়ারা

অশান্ত বাংলাদেশ থেকে শনিবার ভারতে ফিরেছেন আরও ৭৭৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে। তবে মন্ত্রকের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে যে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পাঠরত ৪,০০০-এর বেশি ভারতীয় পড়ুয়া এখনও সে দেশে রয়েছেন। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু অভিবাসন কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) থেকে স্থলপথে দেশে ফেরানো হয়েছে কিছু পড়ুয়াকে। আর বাকিদের বিমানপথে উড়িয়ে আনা হয়েছে। পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেন, সেই জন্য গোটা প্রক্রিয়াটি দেখভালের দায়িত্বে ছিল ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস। ভারতীয় দূতাবাসকে সাহায্যে এগিয়ে আসে চট্টগ্রাম, রাজশাহি, সিলেট এবং খুলনায় অবস্থিত ভারতীয় উপদূতাবাসগুলিও। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে উত্তপ্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশে ফেরানো হয়েছে মোট ৯৯৮ জন পড়ুয়াকে। এখনও সে দেশে রয়েছেন প্রায় চার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া। সেই পড়ুয়াদের সঙ্গেও দূতাবাসের তরফে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের চার রাজ্য— অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজ়োরামের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত রয়েছে। এ রাজ্যের পেট্রাপোল, চ্যাংরাবান্ধার পাশাপাশি ত্রিপুরার আখাউড়া এবং মেঘালয়ের ডাউকির সীমান্তে অভিবাসন কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) দিয়েও ফেরানো হচ্ছে ভারতীয় পড়ুয়াদের। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা শনিবার জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে তাঁর রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪০৫ জন ভারতীয় পড়ুয়া এসেছেন।

রাষ্ট্রপুঞ্জের বার্তা

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলল রাষ্ট্রপুঞ্জ। বার্তা দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকেও। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার টার্ক শুক্রবার বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানিয়েছেন, ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এই ধরনের হামলাকে ‘বিস্ময়কর’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বাংলাদেশ নিয়ে এই প্রথম রাষ্ট্রপুঞ্জের কেউ মন্তব্য করলেন। ভলকার শুক্রবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, আমি তা নিয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। বহু ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে হিংসার কারণে। আহতের সংখ্যাও প্রচুর। বিশেষত, আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি বিস্ময়কর।’’ ভলকারের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর কারা হামলা চালাল, তা খুঁজে বার করা প্রয়োজন। এ জন্য অবিলম্বে নিরপেক্ষ এবং সম্পূর্ণ তদন্ত প্রয়োজন। যাঁরা দোষী, তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা দরকার।

বন্ধ রফতানি

বাংলাদেশে অশান্তির প্রভাব পড়ল পেট্রাপোল বন্দরেও। শনিবার সকালের পর প্রতিবেশী দেশে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে। আমদানিও চলছে ধীর গতিতে। সে দেশ থেকে ভারতে আসা যাত্রীর সংখ্যাও কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে মুদ্রা বিনিময়ে। যাত্রীদের যাতায়াতের জন্য পেট্রাপোলে থাকে যানবাহন। যাত্রী না আসায় তাদের ব্যবসাও ধাক্কা খেয়েছে। শনিবার সকালে সে দেশে পেট্রাপোলের মাধ্যমে ৩৫ ট্রাক পণ্য রফতানি করা হয়েছে। তার পরেই বন্ধ করা হয়েছে রফতানি। আমদানি চলছে ধীর গতিতে। পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট-এর সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শনিবার সকালে রফতানি শুরু হওয়ার পরে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির (এলপিআই)-এর সঙ্গে কথা বলে রফতানি বন্ধ করা হয়েছে।’’ কেন রফতানি বন্ধ করা হল, তা-ও জানিয়েছেন কার্তিক। তাঁর কথায়, ‘‘পণ্য রফতানি করছিলাম। পণ্য পাঠানোর জন্য ও পারে পানাপোলের লোকজনের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে যোগাযোগ করছিলাম। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। এর ফলে পণ্য কী ভাবে পাঠানো হবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। তার পরেই এলপিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করি। এলপিআই আধিকারিক আধ ঘণ্টা রফতানি বন্ধ রাখার কথা বলেন প্রথমে। এর পর ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলে তিনি পুরো রফতানি বন্ধ করার কথা বলেন।’’ কার্তিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যে সব ভারতীয় চালক রয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে আনারও ব্যবস্থা করা হবে।

মামলার শুনানি

রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে কোটা সংস্কার সংক্রান্ত মামলার শুনানি হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল আমিনুদ্দিন মানিকের দাবি, কোটা সংস্কার নিয়ে হাই কোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তা বাতিলের আবেদনই করবে সরকার। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন বড় আকার নিয়েছিল। সেই আন্দোলনের চাপে পড়ে সংসদে দাঁড়িয়ে সব ধরনের সংরক্ষণ বাতিলের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের ১ শতাংশ সংরক্ষণ। কিন্তু সংরক্ষণ বাতিলের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে হাই কোর্টে যান কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দেয়। আবার আগের মতো সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু হয়ে যায় বাংলাদেশে। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে হাসিনা সরকার। সেই মামলার শুনানিই হবে রবিবার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement