(বাঁদিক থেকে) শেখ হাসিনা এবং শি জিনপিং। ছবি: এক্স হ্যান্ডল থেকে নেওয়া।
নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরে এ বার বেজিংয়ে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেন শেখ হাসিনা। বুধবার, তিন দিনের চিন সফরের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ‘গ্রেট হল অফ দ্য পিপল’-এ ওই বৈঠকে অংশ নেওয়ার পরে ২১টি দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাপত্রে সই হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, অর্থনৈতিক ও ব্যাঙ্কিং খাতে সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সহায়তা, ষষ্ঠ ও নবম বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সেতু নির্মাণ, বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য রফতানি এবং দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে সমঝোতা পত্রে সই হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই তালিকায় নেই ‘ভারতের উদ্বেগের’ তিস্তা প্রকল্প সংক্রান্ত বিষয়টি।
জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের আগে চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কুইয়াংয়ের সঙ্গে একটি প্রতিনিধি পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করেন হাসিনা। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে বেজিং-ঢাকা কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে হাসিনার এই সফর। প্রসঙ্গত, জানুয়ারিতে হাসিনার নতুন সরকার শপথ নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় চিনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন নতুন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে দেখা করে তিস্তা নিয়ে তাঁদের প্রকল্পে দ্রুত ছাড়পত্র দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন।
কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত তিস্তা নদীর জলপ্রবাহ নিয়ে তৃতীয় একটি দেশের ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগরদের কাজ করা নিয়ে বাংলাদেশের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছিল দিল্লি। শিলিগুড়ি করিডোরে সংবেদনশীল ‘চিকেন নেক’ অংশের অদূরে চিনের এই প্রকল্প রূপায়ণে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেক বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী মাহমুদ শপথ নেওয়ার পরে দিল্লি এলে তাঁকে সেই উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছিল।
এর পরে গত ২২ জুন দিল্লিতে মোদী-হাসিনা বৈঠকে তিস্তা প্রসঙ্গ আলোচনায় এসেছিল বলে বিদেশ মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে। ঘটনাচক্রে, তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অনির্দিষ্ট কাল পিছিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হাসিনাই বছর পাঁচেক আগে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে চিঠি লিখে তিস্তা প্রকল্পে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে হাসিনা-জিনপিং বৈঠকের দিকে ‘নজর’ ছিল নয়াদিল্লির।