শাকিব আল হাসান। —ফাইল চিত্র।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ভোট বয়কট করে হরতাল অবরোধ শুরু করলেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাংসদ হতে চান বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান।
শনিবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে শাসক দল আওয়ামী লীগের দফতরে খোলা বিশেষ কাউন্টারে দাঁড়িয়ে নিজের মনোনয়ন ফর্মটি কিনে এই ফর্ম বিক্রির সূচনা করেন দলের সভানেত্রী তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পরেই দূর-দূরান্ত থেকে আসা নেতা কর্মীরা বিভিন্ন সংসদীয় কেন্দ্রে প্রার্থী হতে চেয়ে দলীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন করার জন্য ফর্ম কেনা শুরু করেন। দিনের শেষে দেখা যায়, যে ১০৭৪ জন এ দিন দলের প্রার্থী হওয়ার আবেদন পত্র কিনেছেন, তার মধ্যে রয়েছেন ক্রিকেটার শাকিবও।
আওয়ামী লীগ সূত্রের খবর, মাগুরা-১, মাগুরা-২ এবং ঢাকা-১০— এই তিন আসনে প্রার্থী হতে চেয়ে ফর্ম কিনেছেন আইসিসি-র অলরাউন্ডারের তালিকায় একটানা বহু দিন এক নম্বর স্থানটি ধরে রাখা শাকিব। তবে তিনি দেশের বাইরে থাকায় নিজে হাজির হয়ে ফর্ম কেনার সুযোগ পাননি। তাঁর এক প্রতিনিধি দলের দফতরে এসে টাকা দিয়ে ফর্ম কিনেছেন। গত বছর প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নড়াইলের একটি আসন থেকে প্রার্থী করেছিল আওয়ামী লীগ। দলীয় সূত্রের খবর, গত বারেই শাকিব প্রার্থী হতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা তাঁকে বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের তাঁকে প্রয়োজন। শাকিব আপাতত খেলায় মন দিন। তবে তাঁর মনোবাসনার কথা তিনি মনে রাখবেন। সময় মতো তাঁকে সেই দায়িত্ব দেবেন। তার পরে এ বার শাসক দল মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু করা মাত্র প্রতিনিধি পাঠিয়ে তা সংগ্রহ করে ফের দলের নেত্রীর কাছে তিনি বার্তা পাঠালেন। শাকিবের ক্রিকেট কেরিয়ার এখন অন্তিম লগ্নে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে বেশ খারাপ ফলাফল করে দেশে ফিরেছে। এই অবস্থায় দলনেত্রী তাঁকে তিনটি আসনের কোনওটিতে প্রার্থী হিসাবে বাছেন কি না দেখার।
যে মনোনয়ন ফর্মের দাম গত বছর ছিল ২৫ হাজার টাকা, এ বার তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার করেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব। প্রথম দিনেই ফর্ম বেচে ৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা তুলেছেন তাঁরা। ২১ তারিখ পর্যন্ত ফর্ম বিক্রি হবে।
নেতাকর্মীদের ভিড়ে যখন আওয়ামী লীগ দফতর সরগরম, শুনশান নয়া পল্টনে বিএনপির দফতর। ২৮ অক্টোবর এই দফতরের সামনে সভা থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। তাতে এক পুলিশ এবং এক জন সাংবাদিক প্রাণ হারান। বিএনপির প্রথম সারির প্রায় সব নেতাকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। দফতরে তালা মেরে দেওয়া হয়। গুলশানে বিএনপির আর একটি দফতরে তালা দেওয়া না থাকলেও গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে ২৮ তারিখের পর থেকে সেখানে কেউ যাননি। এই অবস্থায় নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রত্যাখ্যান করে কাল রবিবার ভোর ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এ দিন সন্ধ্যায় ঢাকায় একটি ঝটিকা মিছিলও করে তাদের ছাত্রকর্মীরা। কিন্তু, হরতাল কার্যকর করতে তারা কতটা রাস্তায় থাকবে, মানুষই বা ‘গোপন স্থান’ থেকে ডাক দেওয়া হরতালে কতটা সাড়া দেবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে হরতালের মধ্যে চোরাগোপ্তা নাশকতার আশঙ্কা করে নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। কয়েক দিন আগে ঢাকায় আধাসেনাও মোতায়েন করা হয়েছে।