General Waker-uz-Zaman

জল্পনা উস্কে বিএনপি নেত্রী খালেদার সঙ্গে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ়-জ়ামানের বৈঠক! আলোচনায় কী?

খালেদার বাড়িতে সেনাপ্রধান ওয়াকারের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সারাহনাজ় কামালিকা রহমান। ঘটনাচক্রে, কামালিকা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার তুতো বোন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১০:৩২
Share:

(বাঁ দিকে) খালেদা জিয়া, জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে সাক্ষাৎ করলেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ়-জ়ামান। রাজধানী ঢাকার গুলশানে খালেদার বাড়িতে হল বৈঠকও। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপড়েনের আবহে খালেদা-ওয়াকারের এই বৈঠক ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

খালেদার বাড়িতে সেনাপ্রধান ওয়াকারের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী সারাহনাজ় কামালিকা রহমান। ঘটনাচক্রে, কামালিকা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার তুতো বোন। বিএনপি প্রধানের ‘প্রেস উইং’-এর সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট দু’জনের কথা হয়েছে। খালেদার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ফজ়লে এলাহি আকবরও হাজির ছিলেন বৈঠকে।

ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিএনপি এবং কট্টরপন্থী দল ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)-র সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজ়ভি সরাসরি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জামাতের ‘ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ইসলামপন্থী সেই রাজনৈতিক দলের কাছে জানতে চাই, একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল? আপনারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন? আপনারা কোন সেক্টর কম্যান্ডারের আন্ডারে (অধীনে) যুদ্ধ করেছেন?’’ ক্ষমতার পালাবদলের পরে জামাত নেতৃত্ব নিজেদের ‘একমাত্র দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল’ বলে তুলে ধরতে চাইছে বলেও অভিযোগ করেন রিজ়ভি। বলেন, ‘‘এমন কথা বলবেন না। সকলে হাসবে।’’

Advertisement

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ইউনূসের জমানায় জামাতের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় অসন্তুষ্ট বিএনপি। বিশেষত, অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা পদে জামাত-ঘনিষ্ঠদের নিয়োগ এবং নির্বাচন ঘিরে টালবাহানার জেরে সেই অসন্তোষ আরও বেড়েছে। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রিজ়ভির বক্তব্যে। ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার ঘাতকবাহিনীর নেতা হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামাত নেতার বিরুদ্ধে।

হাসিনা জমানায় কয়েক জনের সাজাও হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অন্য দিকে, হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগের মতোই মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যবাহী বিএনপিও। খালেদার স্বামী তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাক সেনার প্রথম বাঙালি অফিসার হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন।

ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ইউনূস সরকার নানা টালবাহানা করে জাতীয় সংসদের নির্বাচন পিছিয়ে দিচ্ছে বলেও ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছে খালেদার দল। এই অস্থির পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আবার সেনার ‘ভূমিকা’ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। হাসিনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেনারেল ওয়াকারের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। ব্রিটেনের প্রখ্যাত কিংস কলেজের এই প্রাক্তনী এক সময় হাসিনার প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। খালেদার সঙ্গে তাঁর বৈঠক নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement