(বাঁ দিকে) মুহাম্মদ ইউনূস এবং শেখ হাসিনা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কার্যত ‘অদৃশ্য’। অবশেষে গা ঝারা দিয়ে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেওয়ার চেষ্টায় হাসিনার দল। আগামী মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচির ডাক দিয়েছে তারা। সমাজমাধ্যমে আওয়ামী লীগের হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারি কর্মসূচির লিফলেট এবং প্রচারপত্র বিলি করবে আওয়ামী লীগ। এর পরে ৬, ১০ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারির কর্মসূচি শেষে ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে তারা। এদিকে হাসিনার দলের কর্মসূচি রুখতে তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে ইউনূসের সরকারও।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বুধবার প্রশাসনের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি জানান, আওয়ামী লীগের পতাকার নীচে কেউ ‘অবৈধ বিক্ষোভ’ করার সাহস দেখালে তাঁকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। সমাজমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনও ধরনের চেষ্টাকে সুযোগ দেওয়া হবে না। তিনি বোঝাতে চান, ইউনূসের সরকার যে কোনও ‘ন্যায্য’ বিক্ষোভের বিরোধী নয়। সমাজমাধ্যমে তিনি লেখেন, “অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনও ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সাংগঠিনক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।”
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতন হয়। তিনি আশ্রয় নেন ভারতে। অন্য দিকে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। তার প্রধান উপদেষ্টা করা হয় ইউনূসকে। বর্তমানে বাংলাদেশে মানবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছে হাসিনার বিরুদ্ধে। সেই মামলা এখনও চলছে। হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভার্বাল)-ও পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। ওই কূটনৈতিক বার্তার প্রাপ্তিস্বীকার করলেও এখনও পর্যন্ত তা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ প্রকাশ্যে জানায়নি নয়াদিল্লি।
বাংলাদেশে হাসিনার সরকারের পতনের পর তাঁর দলের ছাত্রশাখা বাংলাদেশ ছাত্র লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মূল সংগঠন আওয়ামী লীগ অবশ্য নিষিদ্ধ নয়। তবে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা সে দেশের মূল রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে যে ক’টি বৈঠক করেছেন, তাতেও আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিরা ছিলেন না। ‘প্রথম আলো’ অনুসারে, ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল বুধবার জানান, যত ক্ষণ আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা না করবে তত ক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।