দাবনলের গ্রাসে অস্ট্রেলিয়া।—ছবি রয়টার্স।
পুড়ে খাক ১০ লক্ষ হেক্টরেরও বেশি কৃষিজমি, ঝোপ-জঙ্গল। গত কয়েক দিনে দাবানলের তাণ্ডবে অন্তত ৩০০ বাড়ির চিহ্নটুকুও নেই। প্রাণ গিয়েছে ছ’জনের। বেশির ভাগ সময়ে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। এরই মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া ও দক্ষিণের কয়েকটি প্রদেশে ফের নতুন করে দাবানলের সতর্কতা জারি হল।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া প্রদেশের একাংশের তাপমাত্রা আজ ৪৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। ছোট ছোট এলাকায় ৫০টিরও বেশি নতুন দাবানল তৈরি হয়েছে। ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার বেগে বইছে শুকনো বাতাস। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই প্রদেশের ১০ হাজার বাড়ি ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করেছে প্রশাসন। আগামী কালের জন্য ‘কোড রেড’ (চূড়ান্ত সতর্কতা) জারি করে স্থানীয় দমকল বিভাগ ঘোষণা করছে, ‘‘দয়া করে আপনারা এলাকা খালি করে অন্যত্র যান। আগুন ছড়ালে কাউকে আর বাঁচানো যাবে না।’’
দাবানল ছাড় দেয়নি অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহর সিডনিকেও। গতকাল সারা দিন কালো ধোঁয়া ঢেকে রেখেছিল শহরের আকাশ। অনেক বাসিন্দাই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন বলে খবর। তবে দাবানলে সবচেয়ে সিঁটিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ‘জাতীয় সম্পদ’ হিসেবে পরিচিত স্তন্যপায়ী প্রাণী কোয়ালা। নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গত কয়েক দিনে ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ৩০০ কোয়ালা জ্যান্ত পুড়ে মারা গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বেশ কয়েকটি ভিডিয়োয় আধপোড়া কোয়ালাদের দেখে আঁতকে উঠেছেন অনেকেই। এই প্রাণী যে হেতু দাবানল থেকে বাঁচতে আদৌ তেমন দক্ষ নয়, কোয়ালাদের বিশেষ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের মতো এদের বাঁচাতে জ্বলন্ত মাঠে নামতে দেখা গিয়েছে কয়েক জন নাগরিককেও।
আজ আবার কুইন্সল্যান্ডে কোয়ালা-সন্ধানী মিশ্র প্রজাতির কুকুর ‘বেয়ার’-এর ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা গিয়েছে, ‘ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার’ সংগঠনের হয়ে এই কুকুরটি চলতি বছরে গবেষণার প্রয়োজনে কিংবা বিপন্ন ডজনখানেক কোয়ালাকে খুঁজে বার করতে সাহায্য করেছে। এ মাসের শুরুতে তাকে দাবানলে জখম কোয়ালা উদ্ধারের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘বেয়ার’ এখনও তার নয়া অভিযানে সফল না-হলেও, আশা ছাড়ছেন না উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা।