প্রতীকী ছবি।
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেই আমেরিকান সংস্থা মডার্না আইএনসি-র ৭.৭ শতাংশ শেয়ার ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি করে দিল ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা। তবে কোন সময়ে শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। ডিসেম্বরেই জরুরি ভিত্তিতে মডার্নার প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছিল আমেরিকা। তার পর থেকেই এই সংস্থার প্রতিষেধকের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছিল। গত সপ্তাহেই মডার্নার তরফে জানানো হয়, এ বছরে ১৮৪০ কোটি প্রতিষেধক বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার অংশীদারি বিক্রির সিদ্ধান্তে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। মডার্না বাজারে প্রতিষেধক নিয়ে আসার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত শেয়ারের দাম বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি। শেয়ার বিক্রির এটাই উপযুক্ত সময় মনে করেই অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।
অন্য দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন জানিয়েছেন, বিশ্বের ১০ শতাংশেরও কম মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে। গত কাল এক সাক্ষাৎকারে স্বামীনাথন জানান, মূলত উচ্চ জনঘনত্বের শহুরে জনবসতিতে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে। তবে সার্বিক ভাবে ‘হার্ড ইমিউনিটি’ তৈরির ক্ষেত্রে প্রয়োজন প্রতিষেধকের। বর্তমানে যে সমস্ত সংস্থার প্রতিষেধক বাজারে মিলছে, সেগুলি করোনা প্রতিরোধে কার্যকর বলেই মনে করেন হু-র এই বিজ্ঞানী।
এ দিকে করোনার ব্রাজিল স্ট্রেনে আক্রান্ত এক ব্যক্তির খোঁজে তৎপর হল ব্রিটেন সরকার। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দেশে ছ’জনের দেহে এই ব্রাজিল স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে এক জনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই জন্যেই প্রকাশ্যে আবেদন জানানো হয়েছে, তিনি যেন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, সাধারণ করোনার স্ট্রেনের তুলনায় উত্তর ব্রাজিলের মানাউসে উদ্ভূত করোনার এই স্ট্রেন দ্রুত মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য দিকে শরীরে করোনার অ্যান্টিবডিকেও দুর্বল করে এই স্ট্রেন। ফলে করোনার প্রতিষেধক এই স্ট্রেনের উপরে কতটা কার্যকর হবে, সেই নিয়ে ধন্দে বিজ্ঞানীরা। লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের ইমিউনোলজির অধ্যাপক ড্যানি অল্টম্যান জানিয়েছেন, নয়া ব্রাজিল স্ট্রেন নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও তা নিয়ে জনসাধারণ যেন আতঙ্কিত হয়ে না-পড়েন।
গত কালই আমেরিকায় ছাড়পত্র পেয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসনের প্রতিষেধক। আজ সংস্থার চিফ সায়েন্টিফিক অফিসার পল স্টফেলস জানান, মার্চেই তাঁরা ২ কোটি প্রতিষেধক সরবরাহ করতে পারবেন। আশা করছেন, জুনের মধ্যে ১০ কোটি মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হবে। আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিল স্ট্রেনে দেশে অন্তত ২৪৬৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে ফিনল্যান্ডে। ৮ মার্চ থেকে তিন সপ্তাহের লকডাউনও ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ থেকে লকডাউন চেক প্রজাতন্ত্রও।