গান গেয়ে মেশিনগানের জবাব দিচ্ছে গাজ়া

হামাস জঙ্গিরা অস্ত্রশস্ত্র মজুত রেখেছে, এই অভিযোগ তুলে গাজ়ার একটি পাঁচতলা বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। নিহত হয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও তাঁর দু’বছরের শিশুকন্যা।

Advertisement

গাজ়া

সংবাদ সংস্থা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২২
Share:

প্রতিবাদ: ধ্বংসস্তূপে গান। গাজ়া সিটিতে। ছবি: ফেসবুক

হামাস জঙ্গিরা অস্ত্রশস্ত্র মজুত রেখেছে, এই অভিযোগ তুলে গাজ়ার একটি পাঁচতলা বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ইজ়রায়েলি সেনা। নিহত হয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও তাঁর দু’বছরের শিশুকন্যা। জঙ্গি নিধনের নাম করে সাধারণ মানুষকে মারার এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গাজ়াবাসী। আর প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বেছে নিয়েছেন— গান!

Advertisement

গাজ়া সিটির সেই বাড়িটিতে ছিল প্যালেস্তাইনের ‘সৈয়দ আল-মিশাল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। বেশ কয়েক বছর ধরে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ায় যে কয়েকটি হাতে গোনা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছিল, তার মধ্যে অন্যতম এই ‘আল-মিশাল’। পাঁচতলা বাড়িটিতে ছিল প্রেক্ষাগৃহ, নাটকের মঞ্চ এবং একটি গ্রন্থাগার। প্রতি বছর একাধিক সঙ্গীতানুষ্ঠান হত সেখানে। শুধু অনুষ্ঠানই নয়, এই কেন্দ্র ছিল বিভিন্ন শিল্পী ও সংস্কৃতিমনস্ক নতুন প্রজন্মের স‌ংযোগের ক্ষেত্র। তাঁরা এখানে জড়ো হতেন, আড্ডা দিতেন আর পরিকল্পনা করতেন পরবর্তী অনুষ্ঠানের।

সেই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এ ভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পিছনে ইজ়রায়েলের বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। যেমন থিয়েটারকর্মী, ২৩ বছরের যুবক হানিন আল-হোলির কথায়, ‘‘আল-মিশাল কেন্দ্র আমাদের প্যালেস্তাইনি অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য খুবই জরুরি ছিল। তাই ইচ্ছে করেই হামাসের অজুহাত দিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা।’’

Advertisement

ইজ়রায়েলি সেনার সঙ্গে প্যালেস্তাইনিদের সংঘর্ষ চলছেই। প্রতিদিনই দু’পক্ষের একাধিক মানুষ হতাহত হন। ইজ়রায়েলের দিক থেকে উড়ে আসে ক্ষেপণাস্ত্র, বুলেট। আর গাজ়া ও পশ্চিম ভূখণ্ড থেকে ছুড়ে দেওয়া হয় জ্বলন্ত টায়ার, অ্যাসিড-ভরা বোতল। সংঘর্ষের সেই পরিচিত ছবি থেকে অনেকটাই দূরে সরে দিয়ে অন্য ধরনের প্রতিবাদের ভাষা বেছে নিয়েছেন আল-মিশালের সঙ্গে যুক্ত ছেলেমেয়েরা। সপ্তাহে অন্তত এক দিন তাঁরা জড়ো হচ্ছেন ধ্বংসস্তূপে। কাঁধে গিটার, গলায় গান। কোনও দিন হচ্ছে একক সঙ্গীতের অনুষ্ঠান। কোনও দিন বা ব্যান্ডের গান। তিন-চারটি পথনাটিকাও হয়েছে ওই ধ্বংসস্তূপের উপরে। কিশোরী সঙ্গীতশিল্পী আলা খুদেই বলল, ‘‘প্রতিবাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে শিল্প। সেটা বুঝতে পেরেই মনে হয় ইজ়রায়েল এ রকম হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু আমরাও প্রতিবাদ থামাব না। গান-নাটক চালিয়েই যাব। মেশিনগানের জবাব দেব গান গেয়েই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement