Death

মৃত বাবাকে ‘বাঁচিয়ে’ রাখার অভিনব প্রয়াস, ছবিতে চিতাভস্ম মিশিয়ে দিচ্ছেন শিল্পী মেয়ে

মুরের বরাবর ইচ্ছা ছিল বাবা মুরের জন্য একটা ছবি আঁকবেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন কেভ। তার পর এই ইচ্ছাটা আরও প্রবল হয় মুরের।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ১৬:৫৫
Share:

প্রিয়জন হারানো মানুষগুলির মনের কষ্টটা কমাতে চান মুর। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

প্রিয়জনকে অমর করে রাখতে চেয়েছিলেন। নিজের কাছে ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে চেয়েছিলেন। আর সেটাই ইংল্যান্ডের ওয়েকফিল্ডের শিল্পী করতে চলেছেন নিজের শিল্পকর্মের মাধ্যমে। বাবার চিতাভস্মকে নিজের ছবিতে মিশিয়ে দিতে চলেছেন ল্যানসন মুর। নিজের এই শিল্পশৈলীর মাধ্যমেই প্রিয়জনকে হারানো অন্য মানুষদের পাশেও দাঁড়াতে চান ল্যানসন। ‘শিল্পের মাধ্যমেই প্রিয়জনকে অমর’ করতে চান তিনি। প্রিয় জন হারানো মানুষগুলির মনের কষ্টটা কমাতে চান।

Advertisement

৩৮ বছরের মুর থাকেন ওয়েকফিল্ডে। স্বামী এবং দু’বছরের সন্তানের সঙ্গে। এক কালে সমাজকর্মী ছিলেন মুর। এখন পুরোদস্তুর চিত্রশিল্পী। মুরের বরাবর ইচ্ছা ছিল বাবা মুরের জন্য একটা ছবি আঁকবেন। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ক্যানসারে মারা গিয়েছিলেন কেভ। তার পর এই ইচ্ছাটা আরও প্রবল হয় মুরের। ভাবতে থাকেন, কী ভাবে বাবাকে তাঁর ছবির মাধ্যমে অমর করে রাখবেন।

ভেবে একটা উপায়ও বার করেছিলেন মুর। কিন্তু সেই পদ্ধতি নিয়ে যথেষ্ট নিশ্চিত ছিলেন না। এ জন্য প্রয়োজন ছিল গবেষণার। সেই গবেষণার খরচ এখন মুরকে জোগাচ্ছেন আর্টস কাউন্সিল ইংল্যান্ড। কী ভাবে চিতাভস্ম মিশিয়ে দেওয়া যায় ছবিতে, হাতেকলমে দেখছেন শিল্পী।

Advertisement

মুরের কথায়, ‘‘আমার সব কাজে বাবা বরাবর সমর্থন করতেন। সালভাদোর দালির ল্যান্ডস্কেপ অব পোর্ট লিগাত অসম্ভব প্রিয় ছিল তাঁর। চাইতেন, আমিও স্পেনের পোর্ট লিগাতের ভূমিরূপ নিজের রংতুলিতে তুলে ধরি।’’ বাবার ইচ্ছা মেনে ল্যান্ডস্কেপ বা ভূমিরূপ আঁকার কাজেই মন দেন মুর। মুর জানান, তাঁর বাবার প্রিয় শিল্পী দালিও শেষ জীবনের বড় অংশ স্পেনের পোর্ট লিগাত গ্রামে কাটিয়েছেন। তাই সেখানকার ভূমিরূপ আঁকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। ছবির নাম দিয়েছেন ‘আবু ইন পোর্ট লিগাত’। স্প্যানিশ ভাষায় দাদুকে বলে আবুয়েলো। কেভ চাইতেন, তাঁর নাতি-নাতনিরাও ওই নামেই ডাকুক তাঁকে।

গোলাপি, লাল, নীল, হলুদ রং দিয়ে সেই ছবি এঁকে ফেলেছেন মুর। সেখানে ঠিক কোথায় নিজের বাবার অস্থিভস্ম রাখবেন, তাও ঠিক করে ফেলেছেন। মুর কথায়, ‘‘বাবা নৌকায় বাস করতে চাইতেন। ওই ভূমিরূপের ছবিতে একটি নৌকা আঁকব। সেখানেই রেখে দেব বাবার চিতাভস্ম।’’ এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছেন বোন আর ভগ্নীপতিও। তবে এখানেই থামতে চাননি তিনি। বলেন, ‘‘যাঁরা প্রিয়জনকে অমর করে রাখতে চান, তাঁদের জন্যও কাজ করতে চাই। আমার কাজ দেখে যদি তাঁদের প্রিয়জনের কথা মনে পড়ে যায়, বুঝব আমি সফল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement