এখনও ছন্দে ফেরেনি কাশ্মীর। ছবি: পিটিআই।
জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত। তার মধ্যেই চলতি মাসের শেষে মুখোমুখি হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী এবং ইমরান খান। একই দিনে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় বক্তৃতা করবেন তাঁরা। কিন্তু তার আগে কিছুটা হলেও দুাশ্চিন্তা বাড়ল নয়াদিল্লির। কারণ জম্মু-কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে এ বার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন খোদ রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের হাই কমিশনার মিশেল বাশেলত। নাগরিক পঞ্জি থেকে নাম বাদ যাওয়ায় অসমে ১৯ লক্ষ মানুষের জীবন যে অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে, তা নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেন তিনি।
গত ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। উপত্যকাকে দু’টুকরো করে জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ, দু’টি পৃথক রাজ্য গঠন করা হয়। তার পরে দেড় মাস কাটতে চললেও, কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এখনও পর্যন্ত যোগাযোগ পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে। সংবাদমাধ্যমকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। সোমবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদের ৪২তম অধিবেশন শুরু হলে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মানবাধিকার পরিষদের হাই কমিশনার মিশেল বাশেলত। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরে স্থানীয় রাজনীতিক এবং সমাজকর্মীদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে রাখা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। শান্তিপূর্ণ জমায়েতেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। ভারত সরকারের এমন আচরণে কাশ্মীরিদের মানবাধিকার রক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘ভারত এবং পাকিস্তান, দু’দেশের সরকারকে আমার অনুরোধ, দয়া করে মানবাধিকারকে সম্মান এবং রক্ষা করুন। কার্ফু শিথিল করতে এবং অবরুদ্ধ কাশ্মীরে সাধারণ মানুষের কাছে সাধারণ পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই ভারতের কাছে আলাদা ভাবে আবেদন জানিয়েছি। কাশ্মীর নিয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে, তাঁদের পরামর্শ নিয়ে এগনো উচিত। কারণ এই সিদ্ধান্ত সরাসরি তাঁদের ভবিষ্যতের উপর প্রভাব ফেলবে।’’
আরও পড়ুন: ৩৬ দিন পর নিরাপত্তা শিথিল, এখনও ছন্দ ফেরেনি কাশ্মীরে
আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে বড়সড় নাশকতার ছক, গোপনে মাসুদকে জেল থেকে ছেড়ে দিয়েছে পাকিস্তান!
জম্মু-কাশ্মীর ভারত-পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়, ইতিমধ্যেই তাতে সিলমোহর দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সায় দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। যদিও উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে রাখা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’পারেই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে এ দিন নতুন করে দাবি করেন মিশেল।
অসমে নাগরিক পঞ্জির চূড়ান্ত তালিকা থেকে যে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে, তা নিয়েও এ দিন দুশ্চিন্তার কথা জানিয়েছেন মিশেল। তাঁর কথায়, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে ওই সমস্ত মানুষের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাঁদের সবরকম নিরাপত্তা দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি।