খলিস্তানপন্থী ‘সন্ত্রাসী’ অর্শদীপ সিংহ ওরফে অর্শ ডাল্লা। — ফাইল চিত্র।
জামিন পাওয়ার এক মাস পর পা থেকে ‘ট্র্যাকার’ খুলে নেওয়া হল খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসী অর্শদীপ সিংহ গিল ওরফে অর্শ ডাল্লার! এমনটাই জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর একটি প্রতিবেদন।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে, জামিনের শর্ত হিসাবে ডিসেম্বর মাসে মুক্তির পর থেকেই অর্শদীপের গোড়ালিতে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ‘ট্র্যাকার’, যাতে তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখতে পারে সে দেশের পুলিশ। কিন্তু সম্প্রতি ৩০ হাজার কানাডিয়ান ডলার জরিমানা দেওয়ার পর সেই ট্র্যাকার খুলে নেওয়া হয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৫ লক্ষ টাকারও বেশি। তবে এখনই পুরোপুরি স্বস্তি পাচ্ছেন না অর্শদীপ! শহর ছাড়ার আগে স্থানীয় পুলিশের অনুমতি নিতে হবে তাঁকে।
গত সেপ্টেম্বরে কানাডার মিলটন শহরে একটি গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছিল। অভিযোগ, সেই ঘটনায় যোগ ছিল অর্শদীপের। আততায়ীদের আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন তিনিই। ওই ঘটনায় গত ২৮ অক্টোবর কানাডার অন্টারিওতে গ্রেফতার করা হয় অর্শদীপকে। তার পর থেকেই তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই ব্যাপারে কথাবার্তাও চলছিল কানাডা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু তার আগেই ডিসেম্বর মাসে কানাডার আদালতে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়ে যায়। ৩০ হাজার কানাডিয়ান ডলারের বন্ডে অর্শদীপকে জামিন দেন বিচারক। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
খুন, হুমকি দিয়ে টাকা তোলা-সহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত অর্শদীপ ভারতে থাকাকালীনই অপরাধজগতে নাম লিখিয়েছিলেন। তখন তিনি পঞ্জাবের মোগার বাসিন্দা। সেখানেই ছোটখাটো নানা অপরাধে হাত পাকান তিনি। এর পরে অবশ্য ভারতের নানা প্রান্তে একাধিক সন্ত্রাসমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে অর্শদীপের বিরুদ্ধে। ‘গ্যাংস্টার’ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০১৮ সালে কানাডায় পাড়ি দেন অর্শদীপ। ভারতের তরফে তাঁকে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ঘোষণাও করা হয়েছিল। তবে নাগাল পাওয়া যায়নি অর্শদীপের। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে খবর, স্ত্রীকে নিয়ে কানাডায় বাস করছিলেন অর্শদীপ। নিজেকে খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিংহ নিজ্জরের অনুগামী বলে মনে করতেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, নিজ্জরের অবর্তমানে তাঁর তৈরি খলিস্তানপন্থী উগ্রবাদী সংগঠন খলিস্তানি টাইগার ফোর্স (কেটিএফ)-এরও দেখভাল করতেন অর্শদীপ। কানাডায় গিয়েই নিজ্জরের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। প্রথমে নিজ্জরের সঙ্গে যৌথ ভাবে, তার পরে একাই ‘খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাস’ চালিয়ে যান তিনি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কংগ্রেস নেতা বলজিন্দর সিংহ বাল্লিকে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন অর্শদীপ। সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করেছিলেন, বলজিন্দর তাঁর জীবন নষ্ট করে দিয়েছিলেন। অর্শদীপকে অন্ধকার জগতে যেতে বাধ্য করেছিলেন তিনিই।