ইমরানের গ্রেফতারিতে হাত নেই সেনার, দাবি পাক সরকারের। ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের প্রধান ইমরান খানের গ্রেফতারিতে সেনার কোনও ভূমিকা নেই। বুধবার এমনই দাবি করল সে দেশের শাহবাজ় শরিফের সরকার। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)-ই ‘আইন মোতাবেক’ গ্রেফতার করেছে পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ‘ক্যাপ্টেন’কে।
‘আল কাদির ট্রাস্ট’-এর জমি হস্তগত করার অভিযোগে সম্প্রতি ইমরানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার জামিন নিতেই মঙ্গলবার সকালে ইসলামাবাদ হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তিনি। আদালত চত্বরে ঢোকার আগেই তাঁকে গ্রেফতার করে আধাসামরিক রেঞ্জার্স বাহিনী। গ্রেফতারির কয়েক ঘণ্টা পরে ইমরানকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় পাক রেঞ্জার্স। এই মামলায় ইমরান তো বটেই, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী বুশরা বিবির বিরুদ্ধে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেন করার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার বিনিময়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
ইমরানকে ‘অন্যায় ভাবে’ গ্রেফতারির প্রতিবাদে বুধবার পাকিস্তানে ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি (পিটিআই)। অন্য দিকে সমর্থকদের শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন পিটিআই ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মেহমুদ কুরেশি। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ইমরানকে আইনি পরামর্শ দেওয়ার সুযোগটুকুও দিচ্ছে না প্রশাসন। তাঁকে আইনজীবীদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
পাকিস্তানের ‘ডন’ সংবাদপত্র সূত্রে খবর, ইমরানকে ইসলামাবাদ পুলিশ লাইনসে বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়েছে। তাঁকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছে ‘ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো’ (এনএবি)। ইমরানের গ্রেফতারি নিয়ে এখনও জ্বলছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদ থেকে লাহোর, করাচি থেকে পেশোয়ার— সর্বত্র পথে নেমে গ্রেফতারির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পিটিআই সমর্থকেরা। দেশে ১২ ঘণ্টার বন্ধও ডেকেছে পিটিআই। বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে পাক পঞ্জাব প্রদেশে সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে পরীক্ষাও। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে পিটিআই সমর্থকদের। টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভ দেখানো চলছে। পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছোড়ার ঘটনাও জারি রয়েছে। বন্ধের জেরে পাকিস্তানের বড় শহরগুলিতে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট।