লিয়োনেল মেসি (বাঁ দিকে), হামাসের বন্দুক কোলে নিয়ে এস্থার (ডান দিকে)। — ছবি: সংগৃহীত।
আবার ম্যাজিক করলেন লিয়োনেল মেসি! তবে, আর্জেন্টাইন মহাতারকা এ বার ফুটবল মাঠে জাদু দেখাননি, দেখিয়েছেন বন্দুকের উদ্যত নলের সামনে! ইজ়রায়েলের একটি শহর থেকে হামাস বন্দুকধারীরা অপহরণ করেছিলেন ৯০ বছরের এক বৃদ্ধাকে। স্পেনীয় মহিলা হামাসের ভাষা জানেন না। হামাসের সদস্যদেরও স্প্যানিশ অজানা। শেষ পর্যন্ত বৃদ্ধা তাঁদের জানান, মেসির দেশে তাঁর বাড়ি। আর এ কথা বলতেই কেল্লা ফতে! বৃদ্ধাকে সঙ্গে সঙ্গে মুক্তি দেয় হামাস। শুধু মুক্তিই নয়, এক হাতে হামাস সদস্যদের অ্যাসল্ট রাইফেল, অন্য হাতের আঙুলে ‘ভি’ দেখিয়ে ছবিও তুলেছেন বৃদ্ধা। পাশে হাসিমুখে হামাস সদস্য।
ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন গোলমাল নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি তথ্যচিত্র। সেই তথ্যচিত্রে স্থান পেয়েছে এমনই কিছু সাক্ষাৎকার। সেখানেই উঠে এসেছে ৯০ বছরের এস্থার কুনিয়োর অপহরণ বৃত্তান্ত। তিনি জানিয়েছেন, গত বছর ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের একটি শহরের তাঁর বাড়িতে হানা দেন কয়েক জন হামাস সদস্য। পরিবারের আট সদস্যকে পণবন্দি করা হয়। তার মধ্যেই ছিলেন এস্থার। ‘দ্য টাইমস অফ ইজ়রায়েল’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন জানাচ্ছে, এস্থারের দুই নাতি এবং এক নাতবৌয়ের সঙ্গেই রাখা হয়েছিল তাঁকে। তাঁদের গাজ়ায় নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছিল। এরই মধ্যে মরিয়া চেষ্টা করেন এস্থার। ভাষা সমস্যার ঊর্ধ্বে উঠে তিনি হামাসের এক বন্দুকধারীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘তুমি ফুটবল দেখো?’’ প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, এই প্রশ্ন শুনে হামাসের বন্দুকধারী অবাক হয়ে বৃদ্ধার দিকে তাকান। তার পরেই শুরু ‘মেসি ম্যাজিক’! বৃদ্ধার প্রশ্নে হামাসের ওই সদস্য জানান, তিনি ফুটবল দেখতে ভালবাসেন। এর পর এস্থার বলেন, ‘‘আমি মেসির দেশের লোক।’’ তা শুনে মুখে হাসি ফোটে বন্দুকধারীর। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেসিকে দারুন ভাল লাগে।’’ ব্যস, তাতেই কেল্লা ফতে! হামাস মেসির দেশের লোক এস্থারকে তখনই মুক্তি দেয়। বাড়ি ফেরার আগে হামাসের সেই সদস্য বৃদ্ধার সঙ্গে একটি ছবিও তোলেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বৃদ্ধা একটি চেয়ারে বসে। কোলে হামাস সদস্যের অ্যালস্ট রাইফেলটি রাখা। অন্য হাতের আঙুলে ‘ভি’ বা বিজয় চিহ্ন দেখাচ্ছেন। একই ভঙ্গি পাশের হামাস সদস্যেরও। দু’জনেরই মুখে অনাবিল হাসি।
জানা গিয়েছে, শান্তি চুক্তির অংশ হিসাবে বৃদ্ধার পরিবারের বাকিদেরও মুক্তি দিয়েছে হামাস। কিন্তু বৃদ্ধার দুই নাতি এবং নাতবৌ এখনও গাজ়ায়। হামাসের হেফাজতেই।