সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে ওঠার গল্প। দেখতে ডিম্বাকৃতি, কালো রঙের একটি প্লেট, মাঝে হাস্যময়ী একটি মুখ। দাম ১০ হাজার ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৭ লাখ টাকা। কেন? চলুন দেখে নেওয়া যাক...
পাবলো পিকাসোর কাজের সঙ্গে টুকটাক আমরা সবাই পরিচিত। কাজের সঙ্গে না হলেও নামের সঙ্গে পরিচয় বেশির ভাগেরই আছে। সারা জীবনে পিকাসো ৬৩৩টি স্পেশাল এডিশন তৈরি করেছেন।
আমেরিকার একটি টেলিভিশন শো, নাম 'অ্যান্টিক রোডশো' খুবই জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ আসেন তাঁদের অ্যান্টিক নমুনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য। বর্তমান সময়ে নমুনাগুলির দাম কী হতে পারে সেই বিষয়ে এখানে আলোচনা করা হয়।
এমনই এক পর্বে গিয়ে এক মহিলা একটি প্লেট দেখান। জানান, ১৯৭০ সালে ওই প্লেটটি তাঁদের রোড আইল্যান্ডের বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। তাঁর প্লেট সংগ্রহের শখ রয়েছে।
কিন্তু মজার বিষয় হল, প্লেটটি বেশ কয়েক বছর তাঁর রান্নাঘরে স্টোভের উপরে ঝুলছিল। বাড়ির শোভা বাড়িয়ে তোলার জন্য তিনি প্লেটটি রান্নাঘরে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। বাচ্চারাও নাকি খুব পছন্দ করত এই প্লেটটির হাস্যকর মুখ।
মহিলার মতে, তিনি কখনও এর মূল্যের কথা জানতেই পারতেন না, যদি না তিনি একটি আর্ট গ্যালারিতে যেতেন। ২০০৯ সাল নাগাদ একটি গ্যালারিতে গিয়ে তিনি প্রায় একই রকমের একটি প্লেট দেখেন।
গোলাকৃতি একটি প্লেট। ফেশিয়াল ফিচারের সঙ্গে অনেকটাই মিল রয়েছে তাঁর রান্নাঘরে রাখা প্লেটটির। তাঁর কাছেও এমন প্লেট রয়েছে দাবি করায় পাশ থেকে এক জন বলেন, 'আপনি জানেন ওটা কী?'
লোকটি একটি বই খুলে একটি ছবি দেখিয়ে জানতে চান, তাঁর প্লেটটি এই রকম দেখতে কি না। মহিলা ওই প্লেটটির দাম জানতে চান। জানতে পারেন, এর দাম আকাশছোঁয়া।
অনুষ্ঠানটির অ্যাঙ্কর জানান, এই প্লেটটির আসল নাম হল 'ফেস ইন অ্যান ওভাল'। পিকাসোর প্রতিটি কাজের একটি নাম আছে।
পিকাসো অনেক ধরনের স্পেশাল অবজেক্ট তৈরি করেছিলেন। তাঁর মধ্যে রয়েছে জাগ, ফিগারস, বিভিন্ন আকারের প্লেট ইত্যাদি। যেগুলোর মূল্য বর্তমানে লক্ষ লক্ষ টাকা।
পিকাসোর প্রত্যেকটি কাজের পিছন দিকে রয়েছে তাঁর বিশেষ স্ট্যাম্প। যেটি দেখে আসল নকল চেনা যাবে।
ম্যাডুরা স্টুডিয়োর সঙ্গে পিকাসোর সম্পর্ক ২৪ বছরের। এই নির্দিষ্ট প্লেটটি তৈরি করা হয়েছে ১৯৫৫ সালে ম্যাডুরা স্টুডিয়োর জন্য। যার প্রতিটি অবজেক্ট এক-একটি অ্যান্টিক নমুনা।