মিশরীয়রা বিয়ার পছন্দ করতে খুব। শুধুমাত্র পানীয় হিসাবেই নয়, তাদের বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও বিয়ার অতি অবশ্যই থাকত।
ইতিহাসবিদদের মতে, সঠিক বিয়ার প্রস্তুতির কলাকৌশল তাঁদের থেকেই শিখেছে বাকি দেশ। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে মিশরে খোঁজ মিলল বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন বিয়ার তৈরির কারখানার।
নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিশরের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি সেই বিশালাকার কারখানার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
মিশরের উত্তর আবিদোসে রয়েছে কারখানাটি। নীলনদের পশ্চিম দিকে মরু অঞ্চলের মধ্যেই গড়ে তোলা হয়েছিল এই কারখানা। যা মিশরের রাজধানী কায়রো থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে।
জানা গিয়েছে, অন্তত ৫ হাজার বছরের পুরনো এই কারখানা। সে সময় রাজা নারমারের রাজত্ব ছিল এই এলাকায়। তাঁর রাজত্বকালেই কারখানাটি গড়ে উঠেছিল।
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, ৮টি বিশালাকার আলাদা বিভাগ ছিল এই কারখানায়। প্রতিটা বিভাগ ৬৫ ফুট লম্বা এবং ৮ ফুট চওড়া।
প্রতিটি বিভাগে আবার ২টো করে মাটির সারি রয়েছে। যে সারিতে অন্তত ৪০টি বড় আকারের মাটির পাত্র রয়েছে।
এই পাত্রেই আঙুর এবং জল মিশিয়ে প্রস্তুত হত বিয়ার। মূলত রাজ পরিবারের কোনও অনুষ্ঠানে কিংবা উৎসবে এই বিয়ার কাজে লাগত।
এই কারখানার আকার দেখে প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, প্রতিদিন একসঙ্গে অন্তত ২২ হাজার ৪০০লিটার বিয়ার প্রস্তুত করতে সমর্থ ছিল কারখানাটি।
১৯০০ সালে এমন একটি কারখানা থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এক ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ। কিন্তু সে সময় এর সঠিক অবস্থান জানাতে পারেননি তিনি।
আবিদোস নামে মিশরের এই অঞ্চল স্মৃতিসৌধ এবং সমাধিতে ভর্তি। এই অঞ্চলকে তাই প্রাচীন মিশরের মৃত্যুর দেবতা ওসাইরিসের আরাধনাস্থল মনে করা হয়।
মৃত্যুর পর আত্মার পাপ-পূণ্যের বিচার করেন দেবতা ওসাইরিস। তাঁর নাকি অত্যন্ত পছন্দের পানীয় বিয়ার। সে কারণেই তাঁর আরাধনাস্থলে এই বিয়ারের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছিল বলে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানাচ্ছেন।