বাইডেনের মন্তব্যে চাপ বাড়ল পাকিস্তানের উপর। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
পাকিস্তানকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির অন্যতম’ বললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে চার বছর ‘ধূসর তালিকায়’ থাকার পরে চলতি মাসে আন্তর্জাতিক মহল ইসলামাবাদকে মুক্তি দিতে পারে বলে জল্পনা। তার আগে বাইডেনের এই মন্তব্য পাকিস্তানকে বেকায়দায় ফেলল বলে মনে করা হচ্ছে।
আমেরিকার কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যদের সভায় শুক্রবার বাইডেন বলেন, ‘‘আমি মনে করি পাকিস্তান বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশগুলির একটি। উপযুক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই তাদের হাতে পরমাণু অস্ত্র রয়েছে।’’ সম্প্রতি বাইডেন সরকার, এফ-১৬ যুদ্ধবিমান আধুনিকীকরণে ইসলামাবাদকে সহায়তার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়, প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নয়াদিল্লি। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আমেরিকায় গিয়ে বাইডেন সরকারকে নিশানা করে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘‘আপনারা আমাদের বোকা বানাতে পারবেন না।’’ তার পরেই আমেরিকার প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করা হচ্ছে।
বাইডেনের এই মন্তব্যে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও অস্বস্তি বাড়বে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগে গত চার বছর ধরে ‘ধূসর তালিকায়’ থাকা পাকিস্তানকে শুধরে নেওয়ার জন্য নানা শর্ত আরোপ করেছিল আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)। অবশেষে সেই ‘ধূসর তালিকা’ থেকে পাকিস্তানকে সরানো হতে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে।
আগামী ১৮-২১ অক্টোবর প্যারিসে এফএটিএফ-এর ২০৬ জনের প্রতিনিধি দলের বৈঠক হবে। সেখানে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাঙ্ক, ‘এগমন্ট গ্রুপ অফ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’-সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ইসলামাবাদকে ফের ‘সাদা তালিকা’য় ফেরত আনতে পারেন বলে জল্পনা।
এফএটিএফ সূত্রের খবর, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বন্ধ করতে পাকিস্তানকে ২৭ দফা শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে অধিকাংশই পূরণ করতে পেরেছে তারা। যদিও, রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকায় থাকা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন এবং জঙ্গি নেতাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত তেমন কড়া পদক্ষেপ করতে পারেনি পাকিস্তান। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মন্তব্য পাকিস্তানের আশাভঙ্গের কারণ হতে পারে বলে মনে করছেন কূটনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ।