জো বাইডেন। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার ধর্মঘটী গাড়িশ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে মঙ্গলবার মিশিগান যেতে চলেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার নিজের এক্স, অর্থাৎ সাবেকি টুইটার হ্যান্ডলে নিজেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি। বুধবার মিশিগান যেতে পারেন বলে জানিয়ে রেখেছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। সে ক্ষেত্রে ট্রাম্পের আগেই গিয়ে বাইডেন ধর্মঘটীদের প্রতি সমর্থনের বার্তা দিতে চান বলে মনে করা হচ্ছে। এক্স হ্যান্ডলে বাইডেন লিখেছেন, তিনি চান, উভয়ত সুবিধা হয় মালিক এবং শ্রমিক পক্ষ এমন একটি চুক্তিতে আসুক। আমেরিকার গাড়িশিল্প এগিয়ে যাক, শ্রমিক সংগঠন ইউনাইটেড অটো ওয়ার্কার্স (ইউএডব্লিউ)-ও শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত বেতনের রাস্তা খুলে দিক।
বাইডেন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় লিখেছেন, ‘‘মঙ্গলবার আমি পিকেট লাইনে যোগ দিতে মিশিগান যাব এবং ইউএডব্লিউ-এর পুরুষ ও মহিলা কর্মীদের প্রতি আমার সমর্থন জানাব।’’ শ্রমিকরা ন্যায্য দাবির জন্যই লড়াই করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাইডেন। তবে ট্রাম্প শিবিরের দাবি, বাইডেনের জন্য এটা স্রেফ একটা ‘ছবি তোলার সস্তা উপলক্ষ’ ছাড়া কিছু নয়। ‘‘মঙ্গলবার বাইডেনের মিশিগানে যাওয়ার একমাত্র কারণ হল ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি বুধবার যাচ্ছেন’’, ট্রাম্পের প্রচারশিবির শুক্রবার তাদের বিবৃতিতে বলেছে। অন্য দিকে ইউএডব্লিউ বাইডেনকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, তিনি অবশ্যই পিকেট লাইনে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করুন। ফোর্ড মোটরস-এর সঙ্গে তাদের কথাবার্তা ফলপ্রসূ দিকে এগোচ্ছে বলে দাবি করে ইউএডব্লিউ বলেছে, তার ধর্মঘটের পরিধি
বাড়িয়ে জেনেরাল মোটরস এবং স্টেলান্টিস কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও দর কষাকষিতে যেতে চায়।
অনেকেই মনে করাচ্ছেন, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ধর্মঘটীদের পাশে দাঁড়ানোর দৃষ্টান্ত খুবই বিরল। টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ জেরেমি সুরি বলছেন, ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার শ্রমিকদরদি বলে পরিচিত ছিলেন। তিনিও কখনও পিকেট লাইনে যাননি। ১৯০২ সালে প্রেসিডেন্ট থিয়োডোর রুজ়ভেল্ট ধর্মঘটী কয়লা শ্রমিকদের হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। পিকেট লাইনে যাননি। ‘‘শিল্পপতিদের পাশে থাকা বা বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট সরাসরি ধর্মঘটীদের
পক্ষ নিলে সেটা খুবই বড় পরিবর্তন বলতে হবে।’’
ভোটের অঙ্কও এখানে কাজ করছে বলে অনেকেরই ধারণা। আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও এক বার মুখোমুখি লড়াই হতে পারে বাইডেনের সঙ্গে ট্রাম্পের। বেশ কিছু শ্রমিক সংগঠন ইতিমধ্যেই বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু ইউএডব্লিউ এখনও কিছু জানায়নি। মঙ্গলবার বাইডেন মিশিগান গেলে ইউএডব্লিউ তাদের নির্বাচনী অবস্থান স্পষ্ট করে কি না, সে দিকে নজর থাকবে। অন্য দিকে আগের নির্বাচনে শ্রমিক ভোট তেমন একটা পাননি ট্রাম্প। ফলে তিনিও এই ধর্মঘটের মঞ্চকে ব্যবহার করে শ্রমিক সমর্থন নিজের দিকে টেনে আনার চেষ্টায় আছেন। তবে তিনি সরাসরি পিকেট লাইনে যাবেন কি না, জানাননি। আর ইউএডব্লিউ তো আগেই তাদের বিবৃতিতে বলেছে, তাদের লড়াই সেই অর্থনীতির সঙ্গে যা কি না শ্রমিক নিষ্পেষণের মূল্যে ট্রাম্পের মতো লোকেদের সম্পত্তি বৃদ্ধি করে।