জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকা ইজ় ব্যাক— বিশ্বের তামাম রাষ্ট্রনেতাদের প্রতি এমনটাই বার্তা দিলেন সদ্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাদখলের ম্যাজিক সংখ্যা ছাড়িয়ে যাওয়ায় গত কালই তাঁকে শুভেচ্ছা জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন থেকে শুরু করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, এমনকি ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনও। টেলিফোনে সৌজন্য বিনিময়ও করেন অনেকে। তার পরেই ডেলাওয়্যার প্রদেশের উইলমিংটন শহর থেকে সাংবাদিক বৈঠকে বাইডেন বলেন, ‘‘আমি ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি যে, আমেরিকা আবার খেলায় ফিরছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই নতুন করে পথ চলতে চাইছি আমরা।’’
ডোনাল্ড ট্রাম্প কিন্তু এখনও হার স্বীকারে নারাজ। বাইডেন-কমলা হ্যারিসকে শুভেচ্ছাও জানাননি তিনি। বরং এখনও ‘ভোট-চুরির’ অভিযোগ হানছেন ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে। এ দিনই আলাস্কা জিতেছেন ট্রাম্প। জর্জিয়াতেও পুনর্গণনা হবে। জর্জিয়া হারালেও অবশ্য জয়ী থাকবেন বাইডেনই। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে ক্ষমতা হস্তান্তর আদৌ সুষ্ঠু ভাবে মিটবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিচ্ছে। ভোটের ফল নিয়ে বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন ট্রাম্পের বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োও। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আগামী ২০ জানুয়ারি যে ভাবে হওয়ার কথা, সে ভাবেই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে। প্রেসিডেন্ট যে-হেতু বদল হচ্ছে না, তাই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে।’’ এ ভাবে ট্রাম্প শিবিরের তরফে লাগাতার পরাজয় অস্বীকার করাটা পরোক্ষে তাঁকেই বিব্রত করছে বলে এ দিন জানান বাইডেন।
তবে ট্রাম্পরা যা-ই বলুন না কেন, বাইডেনকে জানানো বিশ্বনেতাদের শুভেচ্ছার ঢল কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মাকরঁ বা ম্যার্কেলের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের একাধিক বার খটাখটি লেগেছে। তাই এঁদের তরফে অভিনন্দনবার্তা আসাটা তেমন বিস্ময়কর নয়। কিন্তু ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন বা ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বাইডেনের ফোনালাপ নজর কাড়ছে। সূত্রের খবর, জনসনের সঙ্গে মিনিট কুড়ি কথা হয়েছে বাই়ডেনের। পরে জনসন টুইট করেন, করোনা-মোকাবিলার পাশাপাশি বিশ্ব জলবায়ু নিয়েও বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে তিনি। ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ক বাইডেনের টিমও ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে এই সব বিষয়ে একযোগে পথ চলার ইঙ্গিত দিয়েছে। এ দিকে ট্রাম্প পেন্টাগনে ছাঁটাই পর্ব চালিয়েই যাচ্ছেন। সোমবার থেকে এ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা দফতরের সচিব-সহ অন্তত চার জনকে সরানো হয়েছে। এঁদের জায়গায় ট্রাম্প নিজের ‘অনুগত’ এবং ‘ঘনিষ্ঠদের’ বসাচ্ছেন বলে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে পেন্টাগনে।