ফাইল চিত্র।
শীতের শেষ রেশটুকু যাওয়ার আগে আমেরিকায় নতুন করে করোনা সংক্রমণের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার জন্য মিউটেশনের পরে তৈরি হওয়া নতুন নতুন স্ট্রেনকেই দায়ী করছেন তাঁরা।
আমেরিকার ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, দেশের ৪৫টি প্রদেশে সম্প্রতি ১৮৮০টি করোনা সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে, যার পিছনে রয়েছে করোনার ব্রিটেন স্ট্রেন। ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন এবং ফ্রেড হাচিনসন ক্যানসার রিসার্চ সেন্টারের বিশেষজ্ঞা ট্রেভর বেডফোর্ডের আশঙ্কা, এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যেই সংক্রমণের নতুন ঢেউ আছড়ে পড়তে চলেছে।
তা হলে উপায়? বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রুত টিকাকরণ পর্ব শেষ করে ফেলাই একমাত্র পথ। বেডফোর্ডের মতে, টিকাকরণের পাশাপাশি মাস্ক পরা, সামাজিক মেলামেশা বন্ধ রাখা, শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলার মতো বিষয়গুলি কঠোর ভাবে পালন করতে হবে। তবে তাতেও কাজের-কাজ কতটা হবে, সে বিষয়ে বেডফোর্ডের সন্দেহ রয়েছে।
এই সপ্তাহে আমেরিকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ লক্ষ ছাড়িয়েছে। কিন্তু মানুষ এই বিষয়ে সচেতন তো? দেশের অন্যতম সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউচি বলেন, ‘‘মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলার মতো বিষয়গুলি সকলে জানেন। তবু যখন দেখি, বিষয়গুলি অনেকেই মানছেন না, খুব কষ্ট হয়।... এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। আর অনেকে বলছেন, ভুয়ো খবর!’’
নতুন ঢেউ রুখতে আপাতত তাই টিকাকরণেই জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সিডিসি-র হিসেব অনুযায়ী, আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত ৪ কোটি ৪৫ লক্ষ মানুষ করোনা প্রতিষেধকের অন্তত একটি ডোজ় পেয়েছেন। দেশের মোট জনসংখ্যার ৬ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ৯৮ লক্ষ পেয়েছেন দু’টি ডোজ়ই। আমেরিকায় মর্ডানা এবং ফাইজ়ার এই দু’টি সংস্থার টিকা দেওয়া হচ্ছে। হাউজ়ের একটি শুনানিতে মঙ্গলবার ওই দুই সংস্থা জানিয়েছে, মার্চের মধ্যে তারা প্রতিষেধকের ২৪ কোটি ডোজ় সরবরাহ করতে পারবে।
বুধবার থেকে মালয়েশিয়ায় টিকাকরণ পর্ব চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন এ দিন নিজে প্রথম টিকা নিয়ে সেই পর্বের সূচনা করলেন। আপাতত ফাইজ়ারের টিকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে পারবে বলে তারা আশাবাদী। চিন ও রাশিয়ার তৈরি করোনা প্রতিষেধক তারা ব্যবহার করবে না বলে আজ জানিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার তৈরি ৫ লক্ষ করোনা প্রতিষেধক শ্রীলঙ্কাকে আগেই উপহার পাঠিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় পর্বে তারা ওই টিকার আরও ১ কোটি ৩৫ লক্ষ ডোজ়ের বরাত দিয়েছে। টিকাকরণের দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ইজ়রায়েল। তারা চেক প্রজাতন্ত্র, হন্ডুরাসের মতো বন্ধুরাষ্ট্রকে প্রতিষেধকের জোগান দিচ্ছে। তবে অভিযোগ, ইজ়রায়েলি এলাকার মধ্যে বসবাসকারী প্যালেস্তিনীয়দের ইচ্ছাকৃত ভাবেই টিকাকরণের বাইরে রাখা হয়েছে।