Bangladesh Unrest

হামলার নিশানায় জনজাতি, ক্ষোভে ফুটছে বাংলাদেশ

প্রতিবাদ জানাতে বামপন্থী ছাত্রদের উপরে হামলার নিন্দা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বড়সড় মিছিল করেছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৫
Share:

অশান্ত বাংলাদেশ। —ফাইল চিত্র।

এ বার উগ্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হল বাংলাদেশের আদিবাসী ও জনজাতিদের। এই উগ্র ছাত্রদের দাবি, আদিবাসী বা জনজাতি পরিচয় নিয়ে দেশে কারও থাকা চলবে না। বাংলাদেশে বসবাস করতে হলে সকলকে বাঙালি পরিচয় ও সংস্কৃতি পালন করে চলতে হবে। আদিবাসী ও জনজাতি পরিচিতির স্বীকৃতির দাবিতে ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ নামে একটি সংগঠনের কর্মসূচির উপরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামে এই উগ্রপন্থী ছাত্রেরা পুলিশের সামনেই বুধবার হামলা চালিয়ে লাঠি, রড ও উইকেট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। জনজাতির বহু ছাত্র গুরুতর ভাবে জখম হন।

Advertisement

এর পরে এই বৃহস্পতিবার দেশের সর্বত্র কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এই হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়। ঢাকায় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির ডাকে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচির উপরেও হামলা চালানো হয়। এ বারে পুলিশও লাঠি, গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে এই জমায়েতের উপরে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে উগ্রপন্থী ছাত্রদের পিছনে প্রশাসনের ছত্রছায়াই স্পষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন জনজাতির ছাত্ররা। এ দিন জনজাতিদের উপরে হামলা এবং তার প্রতিবাদ জানাতে বামপন্থী ছাত্রদের উপরে হামলার নিন্দা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বড়সড় মিছিল করেছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল।

এ দিন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রচার বিভাগ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে জনজাতি ছাত্রদের উপরে হামলার নিন্দা করে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে উগ্রপন্থীদের দাবির কাছে যে ভাবে মাথা নামিয়েছে ইউনূস সরকার, তার জন্যই এই হামলা বলে নিশ্চিত জনজাতির ছাত্রেরা। সম্প্রতি নবম ও দশম শ্রেণির নতুন পাঠ্যপুস্তকে একটি দেওয়াল লিখন ছাপা হয়, যাতে বলা হয়েছিল— বাংলাদেশ মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, আদিবাসী নির্বিশেষে সকলের বাসস্থান। ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ নামে ভুঁইফোঁড় সংগঠনটি ‘আদিবাসী’ শব্দটি নিয়ে আপত্তি জানায়। যে কোনও সরকারি দফতর বা সংগঠনে ‘আদিবাসী’ শব্দ ব্যবহার বন্ধ করার দাবিও জানায় এই সংগঠন। সেই আপত্তি শিরোধার্য করে সরকারি নির্দেশে পাঠ্যবই থেকে শুধু যে এই দেওয়াল লিখনের ছবিটি বাদ দেওয়া হয় তাই নয়, আদিবাসী সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থার নাম বদলে ফেলা হয়। অনেকের অভিযোগ, প্রভাবশালী মাথা এই সংগঠনের পিছনে না থাকলে সরকার তাদের দাবিকে এত গুরুত্ব দিত না। এর পরেই দেশের সব জনজাতি ও আদিবাসী পরিচিতির স্বীকৃতির দাবিতে জনজাতি ছাত্ররা জমায়েতের কর্মসূচি নেয়, যার উপরে ভয়ানক হামলা চলে। পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে গোটা দিন ধরেই বিক্ষোভ হয়েছে। সারা দেশেই বিভিন্ন দল ও সংগঠন এই হামলার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement