—প্রতীকী চিত্র।
রবিবার শাসক আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে সোমবার ৩০০-র মধ্যে ২৮৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দিল সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও। ফলে বাংলাদেশে ভোটের প্রস্তুতি এক রকম চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছল। কিন্তু ভোট বাতিল ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইস্তফা দাবি করে অবরোধ-হরতালের পথেই রইল শক্তির বিচারে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বুধবার সড়ক, রেল ও জলপথে অবরোধ এবং বৃহস্পতিবার সারা দিন হরতালের ডাক দিল বিএনপি, যদিও জনজীবনে তার কোনও প্রভাব পড়ছে না। তার পরেও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিএনপি ভোটে অংশ নিতে চাইলে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর থেকে বাড়ানোর কথা ভাববে তারা। নির্বাচন হওয়ার কথা আগামী ৭ জানুয়ারি।
সাবেক সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পরে দলের নেতৃত্ব নিয়ে তাঁর প্রথম স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ এবং ভাই জি এম কাদেরের মধ্যে মতভেদ কখনও তীব্র কখনও চোরাস্রোতের মত রয়ে গিয়েছে। আপাতত দলের সংগঠন জি এম কাদেরের পাশে থাকলেও বেগম রওশনের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলার চেষ্টা করেন নেতৃত্ব। এই ফাটলের চিত্র এ দিন তাঁদের প্রার্থী তালিকাতেও দেখা গিয়েছে। বেগম রওশনের ময়মনসিংহ-৪ আসন খালি রেখে জানানো হয়েছে, তিনি মনোনয়ন ফর্ম রাখতে বললেও এখনও নেননি। আর রংপুর-৩ আসনে গত বারের সাংসদ রওশন-পুত্র সাদ এরশাদের বদলে প্রার্থী করা হয়েছে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে।
আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার একটি ঘোষণার পরে দলের বহু মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা করেছেন। হাসিনা জানিয়েছেন, দলের কোনও প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হলে শাস্তি পেতে হবে। সব আসনে যাতে নির্বাচন হয়, সে জন্য দলের প্রার্থীর পাশাপাশি অন্য নেতারা ডামি প্রার্থী হতে পারবেন। কেউ যদি স্বতন্ত্র হিসাবে জিতে আসতে পারেন, দল তাঁকে গ্রহণ করবে। এই ঘোষণায় দলে গোঁজ প্রার্থী দাঁড়ানোর প্রবণতা বাড়বে বলে মনে করছেন দলের নেতাদের একাংশ। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “সারা দেশের সব আসনে যাতে ভোট হয়, সে জন্য নেত্রী শেখ হাসিনা এই কৌশল গ্রহণ করেছেন।” বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি মন্তব্য করেছেন, “এটা নির্বাচন নয়, শাসক দলের সম্মেলন। পাতানো ম্যাচ খেলব দু’জন, আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ।”