International News

‘আমরা কথা রেখেছি, ইদ মুবারক’, পাক কর্তার ফোন ইন্ডিগোর দফতরে

দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাক অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে টেলেম এন্ট্রি পয়েন্টটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রবিবার। ভারতের অসামরিক বিমান পরিবাহণ মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ইদের পর ধাপে ধাপে বাকি ৯টি এন্ট্রি পয়েন্টও খুলে দেওয়া হবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৯ ১২:১৮
Share:

ছবি- টুইটারের সৌজন্যে।

সোমবারের মধ্য রাতে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইন্ডিগোর ফ্লাইট অপারেশন সেন্টারে আসে একটি ফোন। ও-পার থেকে ভেসে আসে পাকিস্তানের অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (সিএএ) অধিকর্তার গলা। ইন্ডিগোর ডিউটি অফিসার বলেন, ''স্যর, আপনি এখনও জেগে রয়েছেন?" জবাবে সিএএ-র অধিকর্তা বলেন, "বিমানটির উপর নজর রাখছিলাম। সেটা নিরাপদেই অবতরণ করেছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম। কথা রেখেছি। ইদ মুবারক।"

Advertisement

দীর্ঘ তিন মাস পর পাকিস্তানের আকাশসীমায় ভারতীয় বিমানের প্রবেশের সাক্ষী হয়ে থাকল এই কথোপকথন। বালাকোটের জঙ্গি ঘাঁটিতে ভারতীয় বায়ুসেনার হানাদারির পরের দিন থেকেই (২৭ ফেব্রুয়ারি) পাক আকাশসীমা থেকে ভারতে ঢোকার ১১টি এন্ট্রি পয়েন্ট বন্ধ করে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনা। তার পর এই প্রথম পাকিস্তানের আকাশসীমা পেরিয়ে ভারতে ঢুকল কোনও যাত্রীবাহী বিমান। সোমবারের মধ্য রাতে দুবাই থেকে পাকিস্তানের আকাশসীমা পেরিয়ে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামে ইন্ডিগোর এ-৩২০ এয়ারবাস, ১৮০ জন যাত্রী নিয়ে।

বিমানটি পাকিস্তানের আকাশসীমা থেকে আমদাবাদের কাছে, টেলেম এন্ট্রি পয়েন্ট দিয়ে ঢোকে ভারতে। বালাকোটের ঘটনার পর টেলেম-সহ পাকিস্তানের আকাশসীমা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার ১১টি এন্ট্রি পয়েন্টই বন্ধ করে দিয়েছিল বায়ুসেনা। শনিবার তা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিমানবাহিনী। দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পাক অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে টেলেম এন্ট্রি পয়েন্টটি খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রবিবার। ভারতের অসামরিক বিমান পরিবাহণ মন্ত্রকের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, ইদের পর ধাপে ধাপে বাকি ১০টি এন্ট্রি পয়েন্টও খুলে দেওয়া হবে।

Advertisement

ইন্ডিগো-কর্তৃপক্ষ জানিযেছেন, বালাকোটের ঘটনার পরের দিন থেকেই পাকিস্তানের আকাশসীমা পেরিয়ে ভারতে ঢোকার ১১টি এন্ট্রি পয়েন্ট বন্ধ করে দেয় বায়ুসেনা। তার মধ্যে ছিল আমদাবাদের কাছে টেলেম এন্ট্রি পয়েন্টটিও। এর ফলে, অনেক ঘুর পথে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছিল বিমানগুলিকে। তাতে বিমানগুলির যাওয়া-আসার সময় যেমন অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল, তেমনই বেড়ে গিয়েছিল জ্বালীনির খরচ।

আরও পড়ুন- ভিসা-জটে আক্ষেপ পাক হিন্দু পুণ্যার্থীর​

আরও পড়ুন- যুদ্ধবিমান চালাবেন মহিলারাও, সায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের​

পাক কর্তৃপক্ষ শেষ পর্যন্ত তাঁদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেবেন কি না, তা নিয়ে এ বারও সংশয় ছিল ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষের। তাই দুবাই থেকে ১৮০ জন যাত্রীকে নিয়ে ভারতে আসার জন্য ঘুর পথে আসতে হবে ভেবে তাঁরা তৈরি হয়েই ছিলেন। দুবাই থেকে টেলেম এন্ট্রি পয়েন্ট দিয়ে ভারতে ঢোকার জন্য বড়জোর ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ কিলোগ্রাম ওজনের জ্বালানি লাগে বিমানে। সেখানে তাঁরা বিমানে ভরেছিলেন ১৪ হাজার ৬০০ কিলোগ্রাম ওজনের জ্বালানি।

ইন্ডিগো সূত্রে জানানো হয়েছে, বিমানটি ভারতীয় সময় রাত ৮টা ৪২ মিনিটে দুবাই থেকে আকাশে ওড়ে। পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢোকার মিনিট দশেক আগেই বিমানটির পাইলট যোগাযোগ করেন করাচির কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে। অনুমতি পাওয়ার পর ইন্ডিগোর এয়ারবাসটি পাকিস্তানের আকাশসীমায় ঢোকে রাত সাড়ে ৯টায়। রাত ১০টা ৪০ মিনিটে তা পাক আকাশসীমা পেরয়। দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামে রাত ১২টা ১০ মিনিটে। যে ৬৯ মিনিট পাকিস্তানের আকাশসীমায় ছিল ইন্ডিগোর এয়ারবাসটি, সেই সময়ে করাচির এয়ার কন্ট্রোল রুমের (এটিসি) সঙ্গে বিমানের পাইলটের যে কথোপকথন হয়েছিল, তার আগাগোড়াটাই বিমানের গতিপথ নিয়ে।

ইন্ডিগোর এক সিনিয়র পাইলট বলেছেন, "টেলেম পয়েন্ট দিয়ে দিনে ৯টি বিমান যাওয়া-আসা করবে ইন্ডিগোর। এর ফলে, প্রতিটি বিমান-যাত্রায় ২২মিনিট করে সময় বাঁচবে। বাঁচবে প্রচুর জ্বালানিও।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement