প্রতীকি ছবি।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মানুষের কথা তুলে ধরেছেন সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু দেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাই বাদ রয়ে গেল। তালিবান শাসন কায়েম হওয়ার পর চাকরি হারিয়েছেন আফগানিস্তানের অসংখ্য মানুষ। তাদের মধ্যে এক জন জাবিউল্লা ওয়াফা। পেশায় ছিলেন সাংবাদিক। তালিবান আমলে কাজ হারিয়ে হয়েছেন ইটভাঁটার শ্রমিক। নয়া আফগানিস্তানে এখন এটাই দস্তুর।
আফগানিস্তানের বদঘিজ প্রদেশের ফিরোজ কোহ শহরের বাসিন্দা জাবিউল্লা ওয়াফা পেশায় সাংবাদিক। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিকতা করছেন। কিন্তু ১৫ অগস্ট কাবুলের গণতান্ত্রিক সরকারের পতনের পরই চাকরি হারান তিনি। ১০ সদস্যের পরিবার চলবে কী ভাবে, এই ভাবনা থেকে বিকল্প কাজ খুঁজতে থাকেন। কিন্তু কিছুই পাননি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার অবস্থায় মাথায় আসে ইটভাঁটায় কাজ করার কথা। কিন্তু যে হাতে কলম ধরেছেন, সেই হাতে কী ভাবে ইটের নকশা কাটবেন জাবিউল্লা? শেষ কালে খিদের কাছে পরাস্ত হতে হয়।
অবশেষে ১০ সদস্যের পরিবারের পেট চালাতে জাবিউল্লা কাজ নিয়েছেন ইটভাঁটায়। প্রখর রোদে ইটভাঁটার কাজ করতে করতে জাবিউল্লা বলেন, ‘‘সরকার পতনের পর থেকে আমার মতো বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। আমার সংস্থা আমাকে বেতন দিতে পারেনি। এ ভাবে ২ মাস বেতনহীন অবস্থায় থাকার পর বাধ্য হয়ে ইটভাঁটায় কাজ নিই।’’
আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারের পতনের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে অন্তত ১৫০টি সংবাদমাধ্যম। কাজ হারিয়েছেন বহু সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী। তাঁদের প্রত্যেকেই আজ কোনও না কোনও বিকল্প পেশা গ্রহণ করেছেন। তাঁদেরই এক জন জাবিউল্লা, পেটের দায়ে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন ইটভাঁটায়। আফগানিস্তানে জাবিউল্লার মতো মানুষের সংখ্যা কিন্তু কম নয়।