ছবি এএফপি।
আলোচনা শুরু হওয়ার কথা ছিল গত মার্চে। কিন্তু আফগান সরকারের আপত্তিতে তা আটকে ছিল এত দিন। অবশেষে আগামিকাল থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় শুরু হতে চলেছে ঐতিহাসিক সেই আলোচনা। আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবান শীর্ষ নেতৃত্বের সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো-ও।
গত ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকার সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে সই করেছিলেন তালিবানের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা মোল্লা আবদুল গনি বরাদর। মার্কিন প্রশাসনের তরফে গোটা বিষয়টির মধ্যস্থতা করেছিলেন শান্তিদূত জ়ালমে খলিলজ়াদ। তালিবানের শর্ত অনুযায়ী, আফগানিস্তান থেকে সেনার সংখ্যা ১২ হাজার থেকে কমিয়ে ৮,৬০০ করার কথা ছিল আমেরিকার। যে প্রক্রিয়া ফেব্রুয়ারিতেই শুরু করে দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন।
কিন্তু তালিবানের চাহিদা মতো ৫ হাজার তালিব জঙ্গিকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে বেঁকে বসে আশরফ গনির সরকার। আফগান সরকার জানায়, জঙ্গিমুক্তির বিনিময়ে আফগানিস্তানে যে শান্তির প্রতিশ্রুতি তালিবান দিয়েছিল, তা তো তারা রাখেইনি, উল্টে আফগানিস্তানের নানা প্রান্তে জঙ্গি হামলা ও সন্ত্রাসের ঘটনা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। আফগান সরকারের উপরে চাপ তৈরি করে প্রাথমিক ভাবে কিছু জঙ্গির মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল আমেরিকা। কিন্তু শেষ দফার ৪০০ জন জঙ্গির মুক্তি নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হয়। আফগান সরকার ফের জানায়, এই সব জঙ্গিকে মুক্ত করার কোনও প্রশ্নই নেই। অবশেষে সেই জটিলতাও কেটেছে আজ। শেষ ছয় তালিব বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে আফগান সরকার। আর তার পরেই দু’পক্ষের আলোচনার টেবিলে বসাটা নিশ্চিত হয়েছে।
আফগান সরকার ও তালিবান নেতৃত্বের তরফে ২১ জন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন কাল। শেখ আব্দুল হাকিমকে তাদের মূল মধ্যস্থতাকারী হিসেবে উল্লেখ করেছে তালিবান। এই মাসের গোড়াতেই নিজেদের প্রতিনিধির তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলেছিল তারা। আফগান সরকারের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান মাসুম স্টেনকজ়াই। তাদের তরফে বৈঠকে হাজির থাকবেন চার মহিলা প্রতিনিধিও। তবে আলোচনায় বসতে রাজি হলেও আফগানিস্তান পুনর্গঠনে তালিবানের ভূমিকা ঠিক কী হতে চলেছে, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার নির্বাচন ‘পশ্চিমী’ বলে তারা তা মান্য করে না বলে আগেই জানিয়েছিল তালিবান। তাই আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা দেশে নতুন অধ্যায় কী ভাবে শুরু করবে, তা নয়ে ধন্দ রয়েছে।