ছবি: সংগৃহীত।
হতে চেয়েছিল ‘সাহসী’। হয়ে গেল ‘অসৎ’। নিজেদের ঘোষণা করা নামে এমনই অবস্থায় আদানি গোষ্ঠীর মালিকানাধীন অস্ট্রেলিয়ার কয়লাখনি সংস্থা।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে তাদের কয়লাখনির নাম ‘ব্রাভুস’ রাখা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করা হয় সংস্থার তরফে। দাবি করা হয়, মধ্যযুগীয় ল্যাটিন ভাষা অনুসারে ওই শব্দের অর্থ ‘সাহসী’। সংস্থার দাবি, এখন যে অবস্থায় তারা আছে সেখানে আসতে সাহসের প্রয়োজন। তাই এমন নামকরণ।
স্বঘোষণায় ‘সাহসী’ হতে চাইলেও ওই দেশের একাধিক ভাষাবিদ জানিয়ে দেন, ওই শব্দের সঙ্গে সাহসের কোনও কোনও যোগ নেই। বরং তার অর্থ ‘অসৎ’ বা ‘অসাধু’, ক্ষেত্রবিশেষে ‘ভাড়াটে সৈন্য’ও। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্রুপদী সাহিত্য কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টোফার বিশপ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ধ্রুপদী হোক বা মধ্যযুগীয়, কোনও সময়ের ল্যাটিন ভাষা অনুযায়ীই ‘ব্রাভুস’-এর সঙ্গে ‘সাহসী’ বা ‘ব্রেভ’ শব্দের যোগ নেই। তাঁর কথায়, ‘‘ল্যাটিনে সাহসী হল ফরতিস। প্রবাদেই আছে, ‘ফরতুনা ফাভেৎ ফরতিবুস’ অর্থাৎ ভাগ্য সাহসীদেরই সহায় হয়। এটা স্কুলের বাচ্চারাও জানে।’’
মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিম পার্কিন জানিয়েছেন মধ্যযুগীয় ল্যাটিনের একটি অভিধানে তিনি ‘ব্রাভুস’ শব্দটি পেয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণত খল চরিত্রের কাউকে বোঝাতেই
শব্দটা ব্যবহার হত। যেমন অসৎ, অসাধু বা ডাকাত, এ রকম।’’ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের একটি প্রবন্ধ অনুযায়ী, ‘ব্রাভুস’ শব্দটির উৎপত্তি হতে পারে ধ্রুপদী ল্যাটিন শব্দ ‘প্রাভুস’ অর্থাৎ দুর্নীতিগ্রস্ত অথবা ‘বার্বারুস’ অর্থাৎ বিশ্রী বা বর্বর থেকে। পার্কিনের টিপ্পনী, ‘‘গুগলের অনুবাদে ভরসা না করে আদানি গোষ্ঠী নাম বদলের আগে বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিতে পারত।’’