এ বার করোনা-তাস জো বাইডেনের।
বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ক্ষমতা হস্তান্তরের কাজে ক্রমাগত বাধা দিলে আমেরিকায় আরওঅনেকের করোনায় মৃত্যু হতে পারেবলে আশঙ্কা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত বাইডেনের। তাঁর মতে, করোনা-মোকাবিলায় প্রশাসনের সব বিভাগের মধ্যে যথাযথ সমন্বয় এবং পারস্পরিক সহযোগিতাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। কিন্তু ট্রাম্প নিজের জেদেই অনড়! এখনও বলে চলেছেন, ভোটে কারচুপি হয়েছে। তাঁর এই আচরণ ‘সম্পূর্ণ দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সোমবার ডেলাওয়্যারের ওই সভায় অবশ্য কর্মসংস্থান ও নয়া প্রযুক্তিখাতে দেশে বিনিয়োগ আনার ব্যাপারেও একগুচ্ছ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
হোয়াইট হাউসের দৌড়ে যে এ বার বাইডেনই বাজিমাত করেছেন, ৩ নভেম্বর ভোট হওয়ার দিন তিনেকের মধ্যেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। ১০ দিনের মাথায় জানা যায়, ২৭০-এর ম্যাজিক সংখ্যা ছাপিয়ে ৩০৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন বাইডেন। আর ট্রাম্প আটকে ২৩২-এ। ক্ষমতা হস্তান্তর তথা নয়া প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ সংক্রান্ত প্রক্রিয়ার দেখভাল করে আমেরিকার ‘দ্য জেনারেল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। তারা অবশ্য এখনও সরকারি ভাবে বাইডেন কিংবা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কমলা হ্যারিসের জয় ঘোষণা করেনি। কেন করেনি, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়ে তারা যথেষ্টই চাপে। সংস্থার প্রধান এমিলি মার্ফি নাকি অনেক আগে থেকেই জানতেন, এ বার সমস্যা হবে। ভোটে হারলে তিনি যে সহজে ক্ষমতা ছাড়বেন না, এমন ইঙ্গিত আগে দিয়ে রেখেছিলেন ট্রাম্প নিজেও।
২০ জানুয়ারি শপথ নিয়ে হোয়াইট হাউসে আসার কথা বাইডেনের। প্রথম দিন থেকেই করোনা-মোকাবিলায় প্রশাসনকে মাঠে নামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্প এখনও ক্ষমতা হস্তান্তরে এগিয়ে না-আসায় সব কাজই থমকে রয়েছে বলে দাবি বাইডেন শিবিরের।
ট্রাম্প শিবিরের একাংশের দাবি, ক্ষমতা হস্তান্তর হবে ‘দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের’ হাতেই। অন্য অংশ যদিও বলছে, ভোট নিয়ে তাদের দায়ের করা মামলাগুলি ফলপ্রসূ না-হলে সুষ্ঠু ভাবে ব্যাটন যাবে বাইডেনের হাতেই। এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যেই কাল মাইক হাতে নেন বাইডেন। সভার বিষয় ছিল, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা। তাতে ঢোকে অতিমারি প্রসঙ্গও।
করোনা-প্রকোপে বেহাল দেশের অর্থনীতি। অনেকে চাকরি খুইয়েছেন। এ দিকে ভাইরাসের দাপট এখনও বহাল। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিনকেই পাখির চোখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। কার্যত ছটফট করছেন বাইডেনও। নিজের মতো করে করোনা টাস্ক ফোর্স তৈরি করেছেন। টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে এ সপ্তাহে বৈঠকে বসার কথা তাঁর। শোনা যাচ্ছে, ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল’ শীঘ্রই অন্তত একটি টিকায় অনুমোদন দিতে চলেছে। তার পরই কী ভাবে তা দ্রুত দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়া যায়, এখনই ভেবে রাখতে চাইছেন বাইডেন। এ কাজে আমেরিকান সেনাবাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা নয়, বাইডেন চাইছেন আগেই এগিয়ে আসুক ট্রাম্প। বাইডেনের মতে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট যত দ্রুত তাঁর প্রশাসনকে কাজের দায়িত্ব নেওয়ার পথ সহজ করে দেবেন, ততই মঙ্গল।
আরও পড়ুন: অতিমারি রোখার জন্য প্রতিষেধকই যথেষ্ট নয়, সতর্কবার্তা হু প্রধানের
আরও পড়ুন: করোনার ১ বছর হল আজ, উহান থেকে শুরু, এখন বিশ্বে সাড়ে ৫ কোটি