Afghanistan War

Afghanistan: সেনা ছাউনি ছেড়ে বিমান ধরব কখন?

আমরা যেখানে থাকি তার চার দিক উঁচু পাচিল দিয়ে ঘেরা। ফলে বাইরে কী হচ্ছে তা দেখার উপায় নেই।

Advertisement

অশোক ঘোষ

কাবুল শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২১ ০৬:১৬
Share:

বিমানে ওঠার ভিড়। ছবি: রয়টার্স

মাস দেড়েক আগে থেকেই দফায় দফায় আমেরিকান সেনারা ছাউনি ছেড়ে চলে যাচ্ছিলেন। তার পর থেকেই গোলমাল শুরু। গত চার-পাঁচ দিনে তা ক্রমশ তীব্র হয়েছে।

Advertisement

যে বেসরকারি সংস্থায় আমি কাজ করি, তা কাবুলের এই আমেরিকান সেনা আবাসে খাবার দেওয়ার কাজ করত। আমি স্টোরের দায়িত্বে।

আমরা যেখানে থাকি তার চার দিক উঁচু পাচিল দিয়ে ঘেরা। ফলে বাইরে কী হচ্ছে তা দেখার উপায় নেই। কিন্তু পরিস্থিতি যে ক্রমশ জটিল হচ্ছে তা বুঝতে পারছি। বাইরে থেকে সারা দিনরাতই ভেসে আসছে বোমাগুলির আওয়াজ। বাতাসে বারুদের গন্ধ। কিছু আমেরিকান সেনা এখনও পাহারায় আছে, সেই রক্ষে!

Advertisement

এই ছাউনিতে এখন সব মিলিয়ে চারশোর মতো নানা দেশের মানুষ আছেন। তার মধ্যে ১২ জন ভারতীয়। আমার ঘরেই থাকেন কৃষ্ণ দাস নামে এক জন, তাঁরও বাড়ি আমার মতোই নদিয়ার তাহেরপুরে। যদিও তিনি অন্য বিভাগে, কাজও করেন অন্য সংস্থার অধীনে। ভারতীয় দূতাবাস থেকে যোগাযোগ করে বলা হয়েছিল, আমাদের জন্য বিমান তৈরি রয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলেই বিমানবন্দরে চলে যেতে। কিন্তু এখান থেকে বেরোব কী করে? এমনিতেই সীমানার বাইরে পা রাখার অনুমতি নেই। আর এখন তো কথাই নেই। আমাদের সংস্থার আধিকারিক বলছেন, বিপদের মধ্যে আমাদের বেরোতে দেওয়া ঠিক হবে না। যদি নিরাপত্তা দিয়ে আমাদের বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা না হয়, আমাদের বেরোনোর উপায় নেই।

আগে আমি তাহেরপুরেই একটি সংস্থায় সেলসম্যানের কাজ করতাম। বিয়ে করেছি, সন্তানও হয়েছে। খরচ বাড়ছিল। বেশি আয়ের আশায় দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়া। বাড়ির লোকজন ভয়ঙ্কর উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। রোজই ফোনে কথা হচ্ছে। কিন্তু কবে ফিরতে পারব, জানাতে পারছি না।

ছাউনিতে এখন যা খাবার মজুত আছে, তাতে আর সপ্তাহখানেক মতো চলবে। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, যদি ছাউনিতে তালিবান হামলা হয়?

সন্ধ্যায় শুনলাম, রাতে বাস পাঠিয়ে আমাদের বিমানবন্দরের কাছে একটা লজে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। যেন তৈরি থাকি। গত রাতেও এমনই বলা হয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে কোনও গোলমাল থাকায় শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। আজ কি বেরোতে পারব? কখন, কী ভাবে বিমান পর্যন্ত পৌঁছব?

বাড়ির সকলের মুখ খুব মনে পড়ছে। যত দ্রুত সম্ভব, ফিরতে চাই।

(লেখক কাবুলে বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement