চার বছর আগে আবিষ্কৃত হয়েছিল প্রাচীন মমি। মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরের সোনগিনো খাইরখান প্রদেশে। এখনও সেই রহস্যমমি গবেষকদের আলোচনা ও পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে।
সংরক্ষিত দেহটি এক প্রাচীন বৌদ্ধ লামার। তিনি পদ্মাসনে আসীন। পরনে পশুচর্ম। ভস্মে আবৃত শীর্ণ কঙ্কালসার দেহ। প্রাকৃতিক উপায়ে সংরক্ষিত এই মমি-র ফরেন্সিক পরীক্ষাও করা হয়।
মঙ্গোলিয়ার বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠান মঙ্গোলিয়ান ইনস্টিটিউট অব বুদ্ধিস্ট আর্ট-এর প্রধান সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন, ওই লামা মৃত নন। তিনি ধ্যানস্থ। কারণ তাঁর বাম হাত বন্ধ। ডান হাত ধ্যানরত মুদ্রায় খোলা।
দুই হাতের এই মুদ্রা নাকি নির্দেশ করছেন, লামা এখনও ধ্যানরত। বৌদ্ধদের বিশ্বাস, ওই লামা গত দুশো বছর ধরে ‘তুকদাম’ অবস্থায় রয়েছেন। গভীর ধ্যানের এই অবস্থা নাকি জীবন ও মৃত্যুর সীমানা মিলিয়ে মিশিয়ে একাকার করে দেয়। বুদ্ধত্ব প্রাপ্তির পথে একটি ধাপ হল এই ‘তুকদাম’।
প্রথমে জানা না গেলেও পরে প্রকাশিত হয় লামার পরিচয়। বৌদ্ধধর্ম বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এই মমিটি সোরঝ সনঝভ-এর। আজ থেকে প্রায় ১৩০ বছর আগে প্রয়াত হয়েছিলেন ৭০ বছর বয়সী এই লামা। অর্থাৎ জীবিত থাকলে তাঁর বয়স হত দুশো বছর।
মঙ্গোলিয়ার এক গুহায় ধ্যানস্থ ছিলেন লামা সনঝভ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর গুরু ওবগনো গেজার লামা। মঙ্গোলিয়ায় সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই লামার শিষ্যত্ব নিয়েছিলেন সনঝভ।
পদ্মাসনে আসীন লামা সমঝভের মমি পাচার হওয়ার সময়ে ধরা পড়েছিল। তদন্তে জানা যায়, মমিটি চুরি করা হয়েছিল মঙ্গোলিয়ার আরখানগাই প্রদেশের দুর্গম সোডনোমদরঝা পাহাড়ের গুহা থেকে। সেই গুহায় লামা গেজারের ধ্যানরত মমি-দেহের পাশে ফেরানো হয় তাঁর শিষ্য়ের মমিও।